সমগ্র সৃষ্টির জন্যে করুণার নিদর্শন হযরত মুহাম্মদ (স)

সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ মানব মহানবী হযরত মুহাম্মদ (স)। দয়া-মায়া, মমতা, সহমর্মিতা-সমমর্মিতার সর্বোৎকৃষ্ট উদাহরণ তিনি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ্‌ বলেন-

(অতএব হে নবী!) আমি তোমাকে বিশ্বজাহানের জন্যে করুণার নিদর্শন (রহমাতুল্লিল আলামীন) হিসেবে পাঠিয়েছি। (সূরা আম্বিয়া, আয়াত ১০৭)

অর্থাৎ, ধর্ম-বর্ণ-গোত্র নির্বিশেষে সবার জন্যেই তিনি রহমতস্বরূপ।

তাঁর সাম্রাজ্যে সকল মানুষের ছিল নিজ নিজ ধর্মপালনের অধিকার

নবীজী (স) প্রত্যেক ধর্মের মানুষকে সমানাধিকার দিয়েছিলেন। মদিনা সনদে মূর্তিপূজারি, খ্রিষ্টান, ইহুদি সবার-ই নিজ নিজ ধর্মপালনের অধিকারের নিশ্চয়তা ছিল।

অধিকার, তা মুসলমানেরই হোক বা অমুসলিমের, তার হেফাযতে তিনি ছিলেন সমান মনোযোগী।

তিনি ঘোষণা করেন, যদি কেউ (ইসলামি রাষ্ট্রে সুরক্ষাপ্রাপ্ত) অন্য ধর্মাবলম্বীর ওপর অন্যায় করে, তার অধিকার হরণ করে বা তার ধনসম্পত্তি আত্মসাৎ করে, তবে মহাবিচার দিবসে আমি আল্লাহর আদালতে সেই মজলুমের পক্ষে দাঁড়াব। (সাফওয়ান (র); আবু দাউদ)

শুধু মানুষ নয়, তাঁর মমতা ছিল সকল প্রাণের প্রতি

নবীজী (স) বলেন, প্রত্যেক প্রাণীর সাথে ভালো ব্যবহার করা সাদাকা বা দান। কেউ যে-কোনো পশুপাখি বা প্রাণীর উপকার করলে তাকে পুরস্কৃত করা হবে।

পশুপাখির প্রতি নবীজীর মমতার বহিঃপ্রকাশ ছিল তাঁর কর্মে। তিনি বিড়াল পুষতেন। তাঁর জামায় বিড়াল ঘুমিয়ে পড়লে নামাজের সময় এলে তিনি বিড়ালকে না জাগিয়ে জামার যে অংশে বিড়াল ঘুমিয়ে থাকত সেটুকু কেটে ফেলে নামাজে দাঁড়াতেন।

একদিন কয়েকজন সাহাবী পাখির দুটি ছানা ধরে আনে। মা পাখিটি তাদের সামনে এসে মাটির সাথে পেট লাগিয়ে ডানা ঝাপটাতে লাগল। নবীজী (স) এটা দেখে জিজ্ঞেস করলেন, কে পাখির ছানা ধরে এনে একে কষ্ট দিচ্ছে? তিনি ছানা দুটোকে পাখির বাসায় রেখে আসার নির্দেশ দেন।

গাছের যে জীবন আছে, তারও যে ব্যথার অনুভূতি আছে এটা আমরা জানলাম বিশ শতকে এসে। অথচ নবীজী (স) ১৪শ' বছর আগেই বিনা প্রয়োজনে গাছ কাটা ও গাছের পাতা ছিঁড়তে নিষেধ করেছেন।

যে গুণগুলো তাঁকে সাধারণ মানুষের ঊর্ধ্বে স্থান দিয়েছে তার প্রধানতম হলো ক্ষমা

একজন মানুষের পক্ষে কতটা ক্ষমাশীল হওয়া সম্ভব তা নবীজীকে (স) না দেখলে বোঝা যায় না। তাঁর সাথে করা বড় বড় অন্যায়ও তিনি কী অবলীলায় ক্ষমা করে দিয়েছেন!

নবুয়তের দশম বর্ষে নবীজী স্রষ্টার একত্ববাদের প্রচারে তায়েফে হাজির হন। তায়েফবাসীরা তার ধর্ম গ্রহণ তো করলই না, উল্টো ভয়াবহ নির্যাতন চালাল তাঁর ওপর। তাদের ছোঁড়া পাথরের আঘাতে তাঁর পা জখম হয়ে রক্তে জুতা ভিজে গেল।

সেই রক্তাক্ত অবস্থায় যখন জিব্রাইল (আ) এসে বললেন যে, হে আল্লাহর রসুল, আপনি বলুন, পুরো তায়েফকে আল্লাহ তায়ালা ধ্বংস করে দেবেন। নবীজী কিন্তু তা চান নি! তিনি বলেছিলেন, যদি এ জনপদ ধ্বংস হয়ে যায় তো আমি আমার সত্যের বাণী কার কাছে প্রচার করব!

নবীজী ক্ষমাশীল ছিলেন জীবনের প্রতিটি পর্যায়েই

তিনি ক্ষমাশীল ছিলেন সাধারণ মানুষ থাকতে যেমন, যখন রাষ্ট্র ও ধর্মপ্রধান হলেন, অর্থাৎ প্রতিশোধ গ্রহণের সক্ষমতা হলো, তখনও।

খায়বর যুদ্ধে প্রতিপক্ষের এক গোত্রপতি মারা যায়। যুদ্ধশেষে তার স্ত্রী জয়নব নবীজীকে দাওয়াত করল। নবীজী ভেড়ার ঘাড়ের মাংস বেশি পছন্দ করতেন। জয়নব রোস্ট করার সময় পুরো ভেড়াতে বিষ মিশিয়ে দিল। বেশি বিষ দিল ঘাড়ের অংশে।

নবীজী মাংসের একটা টুকরো মুখে দেয়ার সাথে সাথেই বুঝে গেলেন এবং থু থু করে ফেলে দিলেন। কিন্তু আরেকজন সাহাবী ততক্ষণে কিছুটা খেয়ে ফেলেছে।

জিজ্ঞাসাবাদে জয়নব দোষ স্বীকার করল। স্বামী হত্যার প্রতিশোধ নিতেই তার এই কাজ।

একটি বর্ণনামতে নবীজী জয়নবকে ক্ষমা করে দিলেন। আরেকটি বর্ণনায়, তিন দিন পরে ঐ সাহাবী মারা গেলে তাকে হত্যার অপরাধে জয়নবকে মৃত্যুদণ্ড দেয়া হয়। কিন্তু নবীজী তাঁকে বিষ প্রয়োগের জন্যে অভিযুক্তকে কোনো শাস্তি দেন নি।

কোনো বিজয়ীকে বিজিতের বিধবা বিষ প্রয়োগ করবে এবং এরপরও তাকে ক্ষমা করা হবে- এরকম কোনো ঘটনা পৃথিবীর ইতিহাসে দ্বিতীয়টি নেই।

তিনি কখনো প্রতিশোধপরায়ণ ছিলেন না

জালেমের জুলুমের চেয়েও মজলুমের জুলুম সবসময়ই মারাত্মক- অতীত যুদ্ধগুলোতে এটা আমরা দেখেছি। কিন্তু নবীজী (স) ছিলেন এর অনন্যসাধারণ ব্যতিক্রম।

জন্মভূমি মক্কা থেকে তিনি অন্যায়ভাবে বিতাড়িত হয়েছিলেন, সেই মক্কা বিজয় করলেন বিনা রক্তপাতে। কিন্তু বিজয়ীর গর্বিতবক্ষে নয়, মক্কায় তিনি প্রবেশ করেন পরাজিতের ন্যায় বিনয়াবনতভাবে; তাঁর মাথা এমনভাবে নত ছিল যে উটের পিঠে লেগে যাচ্ছিল প্রায়।

ইতিহাস বলে, কোনো রাজ্য জয়ের পর বিজয়ীরা সেখানকার অধিবাসীদের নিশ্চিহ্ন করে; অথবা তাদের ওপর এতটা দমন-নিপীড়ন চালায় যেন তারা বশ্যতা স্বীকার করতে বাধ্য হয়। অথচ নবীজী (স) এমন কিছুই করেন নি। যারা তাঁকে ও তাঁর অনুসারীদের ওপর নির্মম নির্যাতন চালিয়েছিল তাদের বিরুদ্ধে প্রতিশোধ পর্যন্ত নেন নি।

দুর্বলের অধিকার ঘোষণা ও সংরক্ষণে তিনি ছিলেন সদা তৎপর

জাহেলিয়াতের অন্ধকারে নিমজ্জিত আরবে নারীরা ছিল অধিকারবঞ্চিত। এতিমরাও ছিল জুলুমের শিকার। এতিম ও নারীর অধিকার লঙ্ঘন করাকে নবীজী কবিরা গুনাহ বলেছেন।

আসলে নিজে এতিম ছিলেন বলেই এতিমের দুঃখ-দুর্দশা-বঞ্চনা তিনি গভীরভাবে অনুভব করতেন।

একবার ঈদের সকালে নবীজী ঈদের নামাজ শেষে ফিরছেন। তিনি দেখলেন মাঠের এক কোণে বসে একটি বালক কাঁদছে। এমন খুশির দিনেও কান্না! নবীজী ছেলেটির কাছে গিয়ে কান্নার কারণ জিজ্ঞেস করলেন। এতিম ছেলেটির দুর্দশা তাঁকে পীড়া দিল। তাকে তাঁর বাড়ি নিয়ে গেলেন। হযরত আয়েশা (রা) ছেলেটিকে পরম যত্নে গোসল করিয়ে জামা পরালেন। পেট ভরে খেতে দিলেন।

নারীদের তিনি অসম্মানের আস্তাকুঁড় থেকে অধিষ্ঠিত করেন সম্মানের চূঁড়ায়

সেকালে পরিবার সমাজ বা রাষ্ট্র- নারীর সম্মানজনক অস্তিত্ব ছিল না কোথাও। তেমন একটি সময়ে নবীজী নারীদের দিয়েছেন জ্ঞানার্জন, কুমারি নামে পরিচিত হওয়া, স্বাধীন পেশা ও উপার্জন, নিজ সম্মতিতে বিয়ে ও বিবাহবিচ্ছেদ, দেনমোহর ও ভরণপোষণের অধিকার এবং উত্তরাধীকার।

সম্মতি প্রকাশে কতটা স্বাধীন ছিল সেকালের নারীরা তার একটি দৃষ্টান্ত হলো বারিরার ঘটনা।

মুগিসের স্ত্রী সে, দুজনই ক্রীতদাস। একদিন বারিরার মালিক তাকে স্বাধীন করে দেন। তখন সে সিদ্ধান্ত নিল যে, সে আর ক্রীতদাসের ঘর করবে না। মুগিস স্ত্রীকে খুব ভালবাসত। সে গিয়ে নবীজীকে ধরল।

নবীজী বারিরাকে ডেকে বললেন, মুগিসতো তোমাকে পছন্দ করে! তার সাথে তুমি যদি থাক তো ভালো হয়। বারিরা বলল, ইয়া রাসুলুল্লাহ! এটা যদি আপনার নির্দেশ না হয় তো আপনি নিশ্চিত থাকেন, মুগিসের সাথে আমি ঘর করব না! নবীজী তাকে আর জোর করেন নি।

নবীজী তখন আরবের ধর্মীয়প্রধান রাষ্ট্রপ্রধান সেনাপ্রধান ও বিচারকপ্রধান। ভাবলে অবাক হতে হয়, একজন নারী কতটা স্বাধীনতা পেলে এমন ক্ষমতাধর কারো সামনে এরকম কথা বলতে পারে!

এ-বিষয়ে আরো পড়ুন :

ক্রীতদাসকে তিনি দিয়েছেন ঘরের মানুষের মর্যাদা

নবীজী (স) বিদায় হজের ভাষণে বলেন, অধীনস্থদের সম্পর্কে সতর্ক হও। তোমরা নিজেরা যা খাবে, তাদেরও তা খাওয়াবে। নিজেরা যা পরবে, তাদেরও তা পরাবে।

ব্যক্তিজীবনে তিনি দাসকে কতটা মর্যাদা ও মমতা দিয়েছেন তা আমরা অনুধাবন করতে পারি একটি ঘটনা থেকে।

ঘটনাচক্রে নবীজীর খেদমতে নিযুক্ত হয় যুদ্ধবন্দি জায়েদ ইবনে হারিসা। তার বাবা কয়েক বছর খুঁজে ছেলের সন্ধান পান। নবীজীকে তিনি প্রস্তাব দেন যে-কোনো মূল্যের বিনিময়ে জায়েদকে তার কাছে বিক্রি করার। নবীজী হেসে বললেন, জায়েদ যদি আপনার সাথে যেতে চায় তাহলে সে স্বাধীন।

জায়েদকে ডেকে যখন বিষয়টি বলা হল, সে বাবাকে বিস্মিত করে নবীজীর সাথেই থাকার ইচ্ছা ব্যক্ত করল।

তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয় মানুষ, দয়ার মূর্ত প্রতীক

তথাকথিত সভ্য কিছু মানুষ নবীজীকে ‘যুদ্ধবাজ’ অপবাদ দেয়। কিন্তু ইতিহাস কী বলে?

৬২২ সালে মদীনায় হিজরতের পর ১০ বছরে বদর, উহুদ, খায়বর, হুনাইন, তাবুকসহ যতগুলো ‘যুদ্ধ’ নবীজী পরিচালনা করেছিলেন তাতে উভয় পক্ষ মিলিয়ে মোট মৃত্যু ছিল পাঁচশ’র কম! কাজেই এগুলোকে যুদ্ধ না বলে গ্রাম্য কাইজ্জা বলাই যুক্তিযুক্ত।

নবীজী আসলে নিজে থেকে যুদ্ধে জড়ান নি। খায়বর ছাড়া প্রতিটি যুদ্ধই তার ওপরে চাপিয়ে দেয়া হয়েছিল; এবং তিনি যা-কিছু করেছেন তা স্রেফ আত্মরক্ষার প্রয়োজনে। তিনি ছিলেন শান্তিপ্রিয় মানুষ, তাঁর রণনীতিও ছিল অহিংস।

সমস্ত সমর নায়কদের যুদ্ধকৌশল হলো- ধ্বংসলীলা চালিয়ে শত্রুপক্ষকে শারীরিক-মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করে দেয়া। আর নবীজীর রণকৌশল ছিল- শত্রুপক্ষকে অপ্রস্তুত করে দেয়া। তারপরে আলোচনা করে সমঝোতায় পৌঁছানো। যুদ্ধক্ষেত্রে রক্তপাতকে যতভাবে এড়ানো সম্ভব তা তিনি করেছেন।

রণনীতিও যে অহিংস হতে পারে তাঁর নজির সৃষ্টি করেছেন নবীজী (স)।

এ-বিষয়ে আরো পড়ুন :

যুদ্ধবন্দিদের সাথে কতটা মানবিক আচরণ করা সম্ভব তা তিনি করে দেখিয়েছেন

যুদ্ধাহত ও যুদ্ধবন্দি সাধারণ মানুষ ও সেনাদের সুরক্ষায় জেনেভা কনভেনশন প্রবর্তিত হয় ১৯৪৯ সালে। আর নবীজী ৬২৪ সালে বদরের যুদ্ধে ঘোষণা করেন- যুদ্ধে অংশ নেয় নি এমন কাউকে, এবং নারী ও শিশুদের হত্যা করা যাবে না।

বদরে বন্দি হয়েছিল প্রতিপক্ষের প্রায় ১০০ সৈন্য। নবীজী সাহাবীদের নির্দেশ দেন তারা নিজেরা যা খাবে বন্দিদেরও যেন তা-ই খেতে দেয়। আরবে তখন রুটির চেয়ে খেজুর সস্তা ছিল। বন্দিরা পরে বলেছে, আমাদের লজ্জা করেছে যে, আমাদেরকে রুটি দিয়ে তারা নিজেরা খেজুর খেয়েছে।

বদর থেকে ফিরে যাওয়ার পথে বাহন কম ছিল। তারপরও বন্দিদের হাঁটিয়ে নেয়া হয় নি। তারা এবং সাহাবীরা বাহনে চড়েছে পালাক্রমে।

বর্ণবাদ ও শ্রেণীবৈষম্যলোপে নবীজী-ই অগ্রগামী

আরব তখন আচ্ছন্ন ছিল বর্ণ ও শ্রেণীবৈষম্যে। কৃষ্ণাঙ্গ, দরিদ্র ও দাসদের কোনো সম্মান ছিল না। নবীজী উদ্যোগ নেন বৈষম্যলোপে। দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, সকল মানুষ সমান! মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সাদার ওপর কালোর বা কালোর ওপর সাদার কোনো শ্রেষ্ঠত্ব নেই। বংশগত শ্রেষ্ঠত্ব বা কৌলিন্যপ্রথাকে তিনি বিলুপ্ত করেছিলেন।

আসলে ধর্ম-বর্ণ-গোত্র-বংশ নির্বিশেষে প্রতিটি মানুষেরই রয়েছে মুক্ত থাকার অধিকার। নবীজী ঘোষণা করেন, কোনো স্বাধীন মানুষকে দাস বানানো যাবে না। তাঁর কাছে কেউ কোনো অপরাধ বা পাপ করে এলে তাকে প্রায়শ্চিত্ত হিসেবে দাসকে মুক্ত করে দিতে বলতেন।

মক্কা মুক্ত করে নবীজী যখন সাহাবীদের নিয়ে কা’বায় গেলেন, বেলালকে বললেন কা’বায় উঠে আজান দিতে। বেলাল ছিল হাবশি কৃষ্ণাঙ্গ, এককালের ক্রীতদাস। নবীজী এই কাজের মধ্য দিয়ে আভিজাত্যের বিনাশ ঘটিয়েছিলেন।

একবার একজন কৃষ্ণাঙ্গ পরিচ্ছন্নতাকর্মীর মৃত্যু হলে তার সামাজিক অবস্থানের কারণে সংবাদটি কেউ নবীজীকে জানায় নি। কিন্তু পরে যখন তিনি জানলেন তখন তার কবরে গিয়ে তার জন্যে দোয়া করলেন।

মানবাধিকারের সার্থক রূপকার সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ এই মানুষটির জন্মদিনে আমরা অন্তরের অন্তঃস্থল থেকে পেশ করি দরূদ ও সালাম।

এ-বিষয়ে আরো পড়ুন :