কী করে আত্মার স্বাস্থ্যের খেয়াল নেবেন

published : ১৫ জানুয়ারি ২০২৫

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখেছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

কী করে যুক্ত থাকবেন ‘ভিতর বাহিরে অন্তরে অন্তরে?’ আত্মার সাথে আর বাইরের সাথে যুগপৎ? আত্মার স্বাস্থ্যের খেয়াল রাখলে তা সম্ভব।

আমরা জানি, ভালো থাকা সুস্থ থাকা মানে কেবল নীরোগ আর অটুট থাকা নয়, শারীরিক মানসিক আর সামাজিকভাবেও থাকতে হবে সুস্থ। কিন্তু স্বাস্থ্যের এই সংজ্ঞার সাথে ইদানীং যুক্ত হলো আত্মিক স্বাস্থ্য। আত্মিক সুস্থতা বজার রাখতে পারলে তবেই হবে সর্বাঙ্গীণ কুশল।

কেবল ধর্মীয় চর্চা করলেই আত্মিক সুস্থতা হয়, তা নয়। এমন কিছু কর্ম করতে হয় যাতে আপনি খুঁজে পান জীবনের গভীরতর উপলব্ধি। খুঁজে পান জীবনের অর্থ। যে মূল্যবোধ আর বিশ্বাস জীবনকে পরিচালিত করে, আত্মিক সুস্থতার চর্চা করলে একে পাবেন।

এজন্য আছে কিছু উপায় :

যুক্ত হোন প্রকৃতির সাথে

ঘরের বাইরে প্রকৃতির সান্নিধ্যে গেলে পাবেন আত্মার শান্তি। নিজের নিয়মে হাঁটুন। মাঝে মাঝে থামুন প্রকৃতিকে অবলোকনের জন্য। শান্তির দৃশ্য দেখে হবেন অনুপ্রাণিত।

ধ্যানচর্চা করুন

ধ্যান করলে আমাদের উচ্চমার্গে হয় জাগরণের উত্তরণ আর লক্ষ্য হয় নির্দিষ্ট। মহাভারতে অর্জুন যেমন নীলকণ্ঠ পাখির কণ্ঠ ভেদ করেছিলেন, এর পেছনে ছিল তার গভীর ধ্যানমগ্নতা।

দিনে অন্তত ৫-১০ মিনিটের ধ্যানের আছে অনেক হিতকরী ফল। আসে মনে শান্তি, স্বচ্ছতা। আর কমবে চাপ।

অনুপ্রেরণামূলক গ্রন্থ পাঠ করুন

কিছু সময় নিয়ে ভালো একটি বই পড়ুন, যে বই দেয় অনুপ্রেরণা। ইতিবাচক কথা আছে যাতে সে-সব বই পড়লে আত্মার হয় উন্নতি। পড়তে পারেন মহাত্মাদের জীবনী।

পড়তে না চাইলে শুনুন অডিও বুক বা পডকাস্ট। এভাবে পড়লে বা শুনলে হবে আত্মবীক্ষণ। পাবেন আধ্যাত্মিক অভিজ্ঞতা।

খেরোখাতায় লিখুন নিজের মনের কথা

নিজের মনের কথা লিখে ফেলুন কালি-কলম দিয়ে। এ-ও এক ধরনের আত্মিক স্বাস্থ্যের খেয়াল নেয়া। নিজের চিন্তা-ভাবনা কাগজে-কলমে প্রকাশের মাধ্যমে আত্মপ্রকাশ ঘটে, নিজের অনুভূতির প্রকাশ ঘটে।

যুক্ত হোন অন্যদের সঙ্গে

নিজের কুশলের জন্য যা করতে পারেন তা হলো নিজের পাড়া-পড়শী বা সাপোর্ট গ্রুপের সাথে যুক্ত হতে পারেন। নিজে কেয়ারিং হলে এবং অন্যের দুঃসময়ে একটি উপকার করলে মনে পাবেন শান্তি।

কৃতজ্ঞতা প্রকাশের চর্চা করুন

কৃতজ্ঞতা প্রকাশ এক ধরনের স্পিরিচুয়াল সেলফ কেয়ার। যা পেয়েছেন, যার কাছ উপকার থেকে পেয়েছেন, তাকে ধন্যবাদ দিন। কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করুন সৃষ্টিকর্তার কাছে সবকিছুর জন্য।

নিজ নৈতিকতা আর মূল্যবোধকে উঁচুতে তুলে ধরুন আর রাখুন

আপনি নশ্বর—এই ভাবনা রাখুন মনে। একটি যথার্থ যোগ্য কারণে নিবেদিত হোন।

 

অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরীর আরো কিছু লেখা

মাইন্ডফুলনেস আর মনের কুশল, সাথে শরীরচর্চা

কী করে আসবে ভালো ঘুম

চিকিৎসাবিজ্ঞান ও আধ্যাত্মিকতা—এদের মধ্যে সম্পর্ক নিবিড়

জীবন বদলে ফেলা

স্পিরিচুয়াল ফিটনেস ও কুশলের বিজ্ঞান

নিজের যত্ন নিজে করা চাই

ঘুম হলো একটি স্বাস্থ্য গন্তব্য

হাঁটুন সবাই একসঙ্গে

রাগ তা ক্ষণিকের হলেও আনে বিপদ

ঘর যদি হয় সুন্দর, ভালো থাকে মন

কী করে মোকাবেলা করা যাবে স্ট্রেস?

মানসিক চাপে আছেন? প্রতিকারের উপায় আছে, চেষ্টা করুন, পাবেন সুফল

মাইন্ডফুল ইটিং না ইনট্যুইটিভ ইটিং?

কী করে বাড়াবেন মগজের শক্তি?

আধ্যাত্মিকতা ও ধ্যান