ঘুম হলো একটি স্বাস্থ্য গন্তব্য

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

ঘুম থেকে বার বার ওঠা স্বাস্থ্যের জন্যে ভালো নয়। তাই বার বার বাথরুমে যাওয়া কমাতে হবে। সেইসাথে শিথিল করুন বেশি বেশি খবরদারি, নজরদারি।

সাধারণ অভিযোগ : আমি ঘুমাই ঠিকঠাক কিন্তু ঘুম থেকে বার বার জেগে যাই। দুয়েকবার ঘুম থেক জেগে ওঠা অস্বাভাবিক নয়। কিন্তু বার বার জেগে উঠলে নিদ্রাচক্রে বিঘ্ন ঘটে এবং গভীর নিদ্রার পর্যায়ে আর তেমন যাওয়া হয় না। এতে হয় স্বাস্থ্যহানি।

ঘুমে বিঘ্ন ঘটার আছে অনেক কারণ। যেমন, অবস্ট্রাক্টিভ স্লিপ এপনিয়া, মাঝে মাঝে পায়ের নড়াচড়া, ঝাঁকুনি, আয়রন ঘাটতি, হাইপার-থাইরয়েডিজম, ঢেঁকুর, অ্যাজমা, ব্যথা-বেদনা, দুশ্চিন্তা, বিষণ্ণতা এবং ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া। একবার ঘুম ভেঙে গেলে অনেক সময় সহজে ঘুম আসে না।

বাথরুম ব্রেক কী করে কমাবেন?

রাতে বার বার প্রস্রাবের নানা কারণ থাকে। ডায়াবেটিস, প্রস্টেট বড় হওয়া, এপনিয়া, চা-কফি পান ইত্যাদি। আরেক সম্ভাব্য আসামি হলো সার্কাডিয়ান রিদম বা দৈনন্দিন দেহ-ছন্দ। আমাদের শরীরে ২৪ ঘণ্টা নিঃসৃত হয় এন্টি ডাইউরেটিক হরমোন (এডিএইচ), রাতে এটি নিঃসৃত হয় বেশি। এর ফলে শরীর থাকে সজল আর প্রস্রাব হয় কম। স্লিপ শিডিউলের সাথে দেহঘড়ির অমিল হলে অর্থাৎ কখনো খুব ভোরে ওঠেন বা কখনো অনেক রাত জাগেন, এরকম হলে পর্যাপ্ত এই এডিএইচ হরমোন নিঃসরণ হয় এবং তখন প্রস্রাব হয় বেশি।

আবার ঘুম থেকে উঠে যত বার বাথরুমে গেলেন এবং আলো জ্বালালেন, এই আলোর সংকেত বিপর্যস্ত করে ঘুমের ছন্দকে। এতেও বার বার প্রস্রাব হতে পারে। তাই ঘুমাবেন অন্ধকারে। গাঢ় অন্ধকারে খুব বেশি সমস্যা হলে নিভু নিভু আলো বা আবছা আলো রাখতে পারেন বাথরুমে নিরাপত্তার জন্যে। এতে মেলাটনিন নিঃসৃত হবে এবং ঘুম আসবে। সন্ধ্যাবেলায় আলোর সামনে বেশি থাকবেন যাতে মেলাটনিন আগে আগে নিঃসৃত না হয়।

উদ্বেগ-উৎকণ্ঠা-দুশ্চিন্তা এসব ছাড়লে ঘুমাবেন ভালো। শঙ্কা নয়, নিরাপদে থাকুন এবং নিজেকে ভালবাসুন।