মানসিক চাপে আছেন? প্রতিকারের উপায় আছে, চেষ্টা করুন, পাবেন সুফল

published : ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৪

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

আমরা স্ট্রেসকে বিপদ ভাবি কেন? আসলে বিপদ থেকে সুরক্ষার একটি বর্ম হলো স্ট্রেস। একে নিয়ে ইতিবাচকভাবে ভাবুন, কৌতূহল আর সহানুভূতির সাথে দেখুন নিজেকেও। স্ট্রেসকে জানুন, চিনুন, একে মোকাবেলা করুন সহমর্মিতার সাথে। আর এভাবে সৃষ্টি হবে রেজিলিয়েন্স বা সহনশীলতা।

আমাদের শরীর বা কুশল ভাবনা যখন হুমকির মধ্যে পড়ে—এমন কোনো পরিস্থিতি এলে তখন হয় স্ট্রেস।

কী করে নিজেকে শান্ত করবেন স্ট্রেসের সময়?

এর জন্য টিপস হলো S T O P

S Stop : যা করছিলেন তা থেকে বিরতি নিন মানে থামুন।

T Take a breath : ভালো করে শ্বাস নিন।

O Observe : সবকিছু পর্যবেক্ষণ করুন। কী চলছে, কী হচ্ছে, কেমন আমার অনুভব—সবকিছু যুক্তি দিয়ে ভাবুন।

P Proceed : আবেগের আবরণ থেকে বেরিয়ে এগিয়ে যান সামনে।

বক্স ব্রিদিং

শ্বাস নিন ৪ সেকেন্ডে, ধরে রাখুন ৪ সেকেন্ড, শ্বাস ছাড়ুন ৪ সেকেন্ডে, আবার শ্বাস নেয়ার আগে বিরতি নিন ৪ সেকেন্ড। শান্ত না হওয়া পর্যন্ত এভাবে বার বার করুন। প্রতি ৪ সেকেন্ড এমন শ্বাসক্রিয়া নিয়ে একটি চতুষ্কোণ বাক্স ভেবে নিন। স্ট্রেস হলে শরীর শ্বাসক্রিয়ার সময় হ্রস্ব করে। বক্স ব্রিদিং স্নায়ুতন্ত্রকে আহ্বান করে শান্ত হওয়ার জন্য।

পঞ্চ চেতনার সাথে যুক্ত হোন

দেহ চেতনার প্রতি মন কেন্দ্রীভূত হলে শরীরে স্ট্রেসের প্রভাব অত পড়ে না।

আইস থেরাপি

ছোট একটি আইস কিউব মুখে লাগাতে পারেন আর তা গড়িয়ে আনতে পারেন চিবুকে, কপালে ও ঘাড়ের পেছনে।

রি-ফোকাস করার জন্য গ্রাউন্ডিংএক্সারসাইজ

দেখা যায় এমন পাঁচটি জিনিসের নাম, ছোঁয়া যায় এমন চারটির নাম, শোনা যায় এমন তিনটির, গন্ধ নেয়া যায় এমন দুটোর নাম আর স্বাদ নেয়া যায় এমন একটি জিনিসের নাম বলুন।

ক্রমান্বয়ে পেশি শিথিল করা

শরীরের বিশেষ কোনো পেশি টান টান করুন। পাঁচ সেকেন্ড পর শিথিল করুন। আর একেক করে পা, পায়ের উরু—এভাবে উঠে আসুন শরীরের উপর দিকে।

যা করছেন দৃঢ়প্রতিজ্ঞ হয়ে করুন এবং চর্চা করুন আত্মকথন

যে অনুভব আমাদের ছিল তা কি ভুল ছিল?—এমন চিন্তা এলে নিজেকে বলুন : আমার যথাসম্ভব যা করার আমি করেছি। আমার মধ্যে যে ভুলত্রুটি, সেগুলো পেরিয়েই আমি আজকের মানুষ। সব অস্বস্তি আমি মোকাবেলা করছি। অন্যেরা আমাকে ক্ষমাসুন্দর দৃষ্টিতে দেখবে এবং সহজভাবে গ্রহণ করবে।

সামাজিক সংযোগ

স্ট্রেস হলে একে মেনে নিন, চিনুন আর বন্ধু-সুহৃদের সঙ্গে যোগাযোগ করুন। এতে শরীর ছাড়ে অক্সিটোসিন বা ভালবাসা হরমোন যা অন্যের সাথে যুক্ত হতে উৎসাহিত করে।

একাত্মতার অনুভূতি এলে তা দেয় মনোগত অবলম্বন

মানুষের সাথে একাত্ম হওয়ার জন্যে চাই সৃজনশীল কাজকর্ম। যুক্ত হতে পারেন ধর্মীয়/ সামাজিক/ স্পোর্টস গ্রুপে বা কখনো সময় কাটাতে পারেন লাইব্রেরি কিংবা প্রকৃতির মাঝে।