কী করে আসবে ভালো ঘুম

published : ৭ মার্চ ২০২৪

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

জীবনে সর্বাঙ্গীন কুশলের জন্য চাই সুনিদ্রা। শরীর, মন ও আত্মার সুস্থতার জন্য এর দারুণ প্রয়োজন। আজকাল বেশিরভাগ মানুষের মধ্যে দেখা যায়—‘যা পেয়েছি তা নিয়ে সুখী নই, আরো চাই’। প্রত্যাশা আর আকাঙ্ক্ষা হয়ে যায় আকাশচুম্বী। তাই কাজের সন্ধানে, আরো আয়ের সন্ধানে চলে ইঁদুর দৌড়। ফলে স্ট্রেস শঙ্কা ভয় সব তাড়া করে। আর এজন্য হয় না ভালো ঘুম। অনেকের জাগরণে যায় বিভাবরী। আঁখি থেকে ঘুম হারিয়ে যায়, এপাশ-ওপাশ করে কাটে বিনিদ্র রাত।

তাহলে কী করে পাব একটু ঘুম? আছে কিছু উপায় :

১। অব্যাহত রাখুন ঘুমের সূচি। থাক ৮ ঘণ্টার সূচি, এর চেয়ে বেশি নয়। অন্তত ৭ ঘণ্টা ঘুমাবেন। একই সময় ঘুমাতে যাওয়া আর একই সময়ে সকালে ওঠা—এমন এক সূচিতে নির্দিষ্ট থাকুন। ছুটির দিনেও থাক সূচি আর তা কড়াভাবেই মেনে চলুন। দরকার অটলভাবে এতে লেগে থাকা। এতে নিদ্রা-জাগরণ চক্র চলে ঠিকঠাক।

২। কী খাবেন এবং খাচ্ছেন এ নিয়ে থাকবে মনোযোগ। খালি পেটে বা ভরপেটে শুতে যাওয়া ঠিক নয়। রাতে শোবার আগে ভরপেট আহার ঠিক নয়। চা কফি মদ এসব থেকে বিরত থাকুন। চা-কফি পান করলেও বিকেল ৩টার পর আর নয়।

৩। রচনা করুন এক শান্তিময় পরিবেশ। পরিবেশ হবে গা সওয়া শীতল, শান্ত আর অন্ধকার। বিকেলের পর ঘরে বেশি আলো প্রবেশ করতে দেবেন না। করে ফেলুন আলো-ছায়া পরিবেশ, এর পর ছায়ান্ধকার। ব্যবহার করুন ঘর অন্ধকার করার মতো শেড, ভারি পর্দা, কম পাওয়ারের বাতি। কানে ছিপি আর ফ্যান নিজের সুবিধামতো। শোবার আগে কিছু রিচুয়াল : নাতিশীতোষ্ণ জলে স্নান, বাথটাবে বা ধারা জলে। সুগন্ধ সুবাস ঘরময় আর মৃদু ভলিউমে মিউজিক। রচিত হবে ঘুমের পরিবেশ।

৪। দিবানিদ্রা নিলেও এর সময় যেন হয় কম। ভাতঘুম নিলেও ৩০ মিনিটের বেশি নয়। শেষ বিকেলে ঘুম নয়।

রাতের শিফটে কাজ করলে কাজ শুরুর আগে একটু ঘুমিয়ে নিলে ঘুমের ঘাটতি কমে।

৫। শরীর চর্চা। নিয়মিত শরীর চর্চা আনে ভালো ঘুম, কমায় স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তা। ঘুমের আগে আগে ভারি ব্যায়াম নয়। দিনের বেলা বাইরে সময় কাটালে ঘুম হয় ভালো।

৬। স্ট্রেস আর দুশ্চিন্তা দিতে হবে সামাল। ঘুমানোর আগে দুশ্চিন্তা সামলে নিন। কাল কী করবেন এর একটি তালিকা খেরো খাতায় লিখে নিন। অফিসের সমস্যা মাথায় করে বাসায় আনবেন না। স্ট্রেস সামাল দেয়ার জন্য আছে নিজেকে রিল্যাক্স করার কৌশল—ব্রিদিং টেকনিক, প্রাণায়াম, ধ্যানচর্চা।