নিজের যত্ন নিজে করা চাই

published : ৮ এপ্রিল ২০২৪

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

সারাদিনের ব্যস্ততা। নানা সমস্যা নিজের, পরিবারের। হয়তো অনেক চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি হতে হচ্ছে। এর মধ্যে নিজের যত্নের সময় বাঁধা বেশ কষ্টের, তবু তা করতে হয়। সত্যি কথা হলো, দিনশেষে নিজের খেয়াল নিজেকেই নিতে হবে। কেউ তা নিতে অতটা এগিয়ে আসে না। আসলে অনেক সময় সম্ভবও হয় না।

তবে ভালো থাকতে হলে একটু স্বার্থপর হলে কী এমন ক্ষতি! হলেন, তাতে কী? ভালো থাকার জন্য এটুকু করা যায়, তাই না? এজন্য একটা প্ল্যান বা রুটিন করে নিলেই হয়।

কোভিডের সময় কেমন হয়েছিল? সবাই খুবে স্ট্রেসে ছিলেন। এ-ছাড়া স্বাস্থ্যবিধি খুব মেনে চলেছেন আর নিজের যত্ন নিজে করেছেন।

নিজের খেয়াল কীভাবে রাখবেন এর কোনো ধরাবাঁধা রুটিন নেই

ভালবেসে করুন যা যা পছন্দ, স্বাস্থ্যকর হলেই হলো। যেমন, দিনের একসময় ধ্যানচর্চা করুন ১৫ মিনিট। গান শুনলেন আধাঘন্টা। নিজের সাথে একান্তে সময় কাটান কিছুক্ষণ। ঘর-দোর ঝাড়ামোছা করলেন, একটু দড়ি লাফ করলেন। হাঁটলেন ১০ মিনিট প্রতিবার আহারের পর। ঘুমালেন ৮ ঘণ্টা, আর প্রতিদিন একটু করে লিখুন খেরোখাতায়।

তবে কথা আছে, পরিকল্পনা করার সময় হতে হবে বাস্তববাদী

অনেক বড় পরিকল্পনা করলেন কিন্তু কাজের চাপে সংসারের চাপে কিছুই করা হলো না, তাহলে লাভ নাই। তা-ই করতে হবে যা বাস্তবে করা সম্ভব। এই রুটিনে করা যাবে রদবদল, তা হবে নমনীয়। অত কঠিন ধরাবাঁধা হবে না। এমন সব কাজ থাকবে যা শরীর শিথিল করবে, শান্ত করবে মন।

আর একটা কথা—জানতে হবে নিজের সীমারেখা আর চিনতে হবে বাধাগুলো

জীবনে কাজ হোক বা মানুষের সংস্পর্শ হোক, প্রতিটি ক্ষেত্রেই নানারকম দায়িত্ব। এসবের একটি সীমারেখা এঁকে নেবেন। হতে পারে মনে মনে—এই পর্যন্ত যাবেন, এর চেয়ে বেশি নয়। মাত্রাতিরিক্ত কিছু করতে গেলে পারফরমেন্সও খারাপ হয়। আর বাধা বা অস্বাভাবিক সবকিছু যা মনকে বিক্ষিপ্ত করে, এগুলো দূর করে দিন।

নিজের তালিকার সাথে অন্যকে সময় দেয়ার তালিকাও করা উচিত

অন্যকে সময় দেবেন, সৎ ভাবে দেবেন, প্রাণ-মন দিয়ে দেবেন। আবার নিজের মন-শরীর-আত্মার কুশল এমনকি সামাজিক আর পারিবারিক কুশলের দিকেও দিতে হবে নজর। নিজের জন্য কিছু জায়গা থাকা উচিত।

নিজের যত্ন নেবেন যখন, তখন সম্পূর্ণভাবে নিজের জন্য হাজির থাকবেন

লক্ষ্য রাখতে হবে দৈনন্দিন কাজকর্মের প্রতি—মন আর শরীর এতে কেমন সাড়া দেয়। আর এতে আপনার উৎপাদন ক্ষমতা কতটা প্রভাবিত হচ্ছে তা-ও দেখুন। যদি মনে হয় চাপ বোধ হচ্ছে, তাহলে পিছিয়ে আসুন।

যা করবেন একরকম হবে

কাজের ধারাবাহিকতা রাখতে হবে। তা না হলে কাজের কাজ হবে না।

ছোট ছোট কাজ একসাথে করে দেখবেন বিশাল কাজ হয়ে গেল নিজের জীবনে

খুব ব্যস্ত কাটছে দিন। এর মধ্যে থেকে নিজের জন্য বের করে নিন কয়েক মিনিট। একেবারে নিজের জন্য। একটি মোমবাতি জ্বালান, নয়তো গান শুনুন, হাঁটুন বা নাচ করুন।

পরিকল্পনা একটি আমার মতো করে দিলাম। এবার নিজের জন্যে তা তৈরি করুন, দেখুন একে মেনে চললে কেমন লাগে।

জানাবেন কিন্তু …