ধনেপাতা, পুদিনা পাতা, লেটুস পাতা, পালং শাক, ব্রকোলি, বাঁধাকপি- পুষ্টিবিজ্ঞানীদের মতে এই ঘন সবুজ পাতাযুক্ত শাকসবজি হচ্ছে পুষ্টিগুণের আধার; যে-কারণে এগুলোকে বলা হয় ‘নিউট্রিশনাল পাওয়ারহাউজ!’
সবুজ শাকসবজিতে রয়েছে বিটা ক্যারোটিন, ল্যুটিন এবং জিয়াক্স্যানথিনের মতো ফাইটোকেমিকেলস, যা আমাদের দেহকোষকে সুরক্ষা দেয়, ছানি পড়া থেকে চোখকে বাঁচায় এবং ক্যান্সার প্রতিরোধ করে। এগুলোতে থাকা ক্লোরোফিল রক্তকে অ্যালকালাইন বা ক্ষারীয় রাখতে সাহায্য করে; ফলিক এসিড হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ ও স্ট্রোক প্রতিরোধ করে; ভিটামিন ই এবং সি ত্বককে করে উজ্জ্বল, মসৃণ ও আকর্ষণীয়।
কাজেই সুস্থ কর্মব্যস্ত দীর্ঘজীবনের জন্যে প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায় রাখুন পর্যাপ্ত সবুজ শাকসবজি।
সবুজ শাকসবজির গুণাগুণ সম্পর্কে জানেন না এমন মানুষ কমই আছে। দৈনন্দিন খাদ্যতালিকায় সেগুলো রাখেনও। তবে স্রেফ রান্না বা প্রক্রিয়াকরণের ভুলে এই খাবারগুলোর পুষ্টিগুণ অনেকাংশেই হারাই আমরা।
আসলে শাকসবজি সেদ্ধ করলে এগুলোতে থাকা এনজাইম, ফাইটোকেমিকেল, ভিটামিন, মিনারেলসহ পুষ্টিগুণের একটা বড় অংশ নষ্ট হয়ে যায়। তাই এগুলো খাওয়া উচিৎ অর্ধসেদ্ধ অবস্থায়।
তবে সবচেয়ে ভালো হয় যদি সবুজ শাকপাতা সরাসরি কাঁচা খাওয়া যায়। কাঁচা পাতার বিস্বাদ বা গন্ধ এড়াতে এগুলোকে জুস হিসেবেও খেতে পারেন। ‘গ্রিন জুস’- এক নামেই পরিচিত এই পানীয়।
পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ পানীয় হচ্ছে গ্রিন জুস। সুস্থ কর্মব্যস্ত দীর্ঘজীবনের জন্যে এখন অনেকেই একে রাখছেন প্রতিদিনের খাদ্যতালিকায়। বিভিন্ন রোগে আক্রান্তদের, বিশেষত হার্ট ও ডায়বেটিসের রোগীদের এখন ডাক্তাররা পরামর্শ দিচ্ছেন গ্রিন জুস পানের।
সুস্থ-সবল মানুষেরাও এই জুস পান করে হৃদরোগসহ বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধ করতে পারেন, লাভ করতে পারেন স্বাভাবিক সুস্থতা ও প্রাণবন্ততা।
ঘরে বসে খুব সহজেই বানাতে পারেন গ্রিন জুস।
যা যা লাগবে
প্রস্তুতপ্রণালী
পরিমাণমতো পাতা কয়েক ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখুন। এতে ক্ষতিকর কেমিকেল বেরিয়ে যাবে, হজমও হবে সহজ।
এবার পাতাগুলো ভালোভাবে ধুয়ে ব্লেন্ডারে নিন। আমলকি ধুয়ে বীজ ফেলে পাতার সাথে যোগ করুন। পরিমাণমতো পানি নিন। অল্প আদা, জিরা, হিমালয়ান সল্ট/বিট লবণ দিন। ব্লেন্ডিং শেষে ছেঁকে নিন।
ব্যস, হয়ে গেল গ্রিন জুস! চাইলে স্বাদ বাড়াতে এতে যোগ করতে পারেন অল্প লেবুর রস, মধু বা গুড়।
১। এটি রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায়।
২। ভিটামিন এ, কে, সি এবং আয়রনের দারুণ উৎস এই জুস এনার্জি বুস্ট করে। ফলে বাড়ে সতেজতা ও প্রাণবন্ততা।
৩। শরীরের ক্ষতিকর পদার্থ বা টক্সিন বের করার মাধ্যেমে রক্তকে পরিশোধন করে।
৪। হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ এবং সব ধরনের ডায়াবেটিসের ঝুঁকি হ্রাস করে। অ্যান্টি-অক্সিডেন্টসমৃদ্ধ বলে অন্যান্য রোগব্যাধি কমাতেও সাহায্য করে।
৫। বিপাকক্রিয়াকে উন্নত করে।
৬। ত্বকের লাবণ্যভাব বৃদ্ধি করে।
প্রতিদিন সকালে খালি পেটে খেতে পারেন এক গ্লাস গ্রিন জুস। তবে বিশেষ কোনো শারীরিক সমস্যা থাকলে ডাক্তারের পরামর্শ মোতাবেক পান করাই উত্তম।
গ্রিন জুস ব্লেন্ড করার পর সাথে সাথে খাওয়াটাই সবচেয়ে ভালো। একবার বানিয়ে ফ্রিজে রেখে অনেকদিন খাওয়ার চাইতে ভালো হয় যদি বানানোর ২৪ ঘণ্টার মধ্যেই খান।
আসলে এই অসাধারণ পুষ্টিদায়ক পানীয় থেকে এত চমৎকার উপকার আপনি পাবেন যার জন্যে প্রতিদিন একটু সময় আলাদা করে রাখাই যায়!