published : ১৪ মার্চ ২০২৪
আর্টিকেলের শিরোনাম দেখে অনেকে চমকে উঠতে পারেন- ‘ডিজিটাল ডায়েটিং’ আবার কী বস্তু!
ডিজিটাল ডায়েটিং হলো এক ধরণের নিয়ন্ত্রণ, তবে সেটা খাবারের নয়। বিভিন্ন স্মার্ট ডিভাইসের পেছনে আমরা যে অঢেল সময় ব্যয় করি তা সচেতনভাবে নিয়ন্ত্রণই হলো ডিজিটাল ডায়েটিং।
স্মার্টফোন, স্মার্ট টিভি, ডেস্কটপ কম্পিউটার, ল্যাপটপ, ট্যাবলেট, ই-রিডারস, গেমিং কনসোল, স্মার্টওয়াচ, ফিটনেস ট্র্যাকার, হার্ট রেট মনিটর, ডিজিটাল ক্যামেরা, জিপিএস, ডিজিটাল ভয়েস এসিস্ট্যান্টস- স্মার্ট ডিভাইজের তালিকা নেহায়েত ছোট নয়। এখনকার সময় এসব ডিভাইস ব্যবহার করছে শিশু থেকে বৃদ্ধ কম-বেশি সবাই-ই। অনেকের তো দিন পারই হয় স্মার্টফোনে।
ডিজিটাল ডিভাইসের এই মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার তৈরি করছে আসক্তি যার পরিণাম দেহমনের স্বাস্থ্যহানী। বিজ্ঞানীরা তাই এখন জোর দিয়ে বলছেন ডিজিটাল ডায়েটিং-এর কথা। যার মূল উদ্দেশ্য ডিজিটাল ডিভাইসের সাথে আমাদের সম্পর্কের ভারসাম্য বজায় রাখা এবং সচেতনভাবে ডিজিটাল কন্টেন্ট ও স্ক্রীণ-টাইম নিয়ন্ত্রণ।
বরং ডিজিটাল প্রযুক্তির কৌশলগত এবং মননশীল ব্যবহার নিশ্চিতকরণ যাতে ব্যবহারকারীর কল্যাণ নিশ্চিত হয়। ব্যাপারটা অনেকটা ‘সাপ মরবে কিন্তু লাঠি ভাঙবে না’র মতো!
যেহেতু ডিজিটাল ল্যান্ডস্কেপ দ্রুত বিকশিত হচ্ছে তাই সময় এসেছে মানুষের ব্যক্তিগত ও সামাজিক স্বার্থের সাথে ডিজিটাল অস্তিত্বের সংঘর্ষ এড়িয়ে একটি মধ্যবর্তী অবস্থানে আসা। এরই ধারাবাহিকতায় ডিজিটাল ডায়েটিং প্রযুক্তি ব্যবহারের ক্ষেত্রে আধুনিক বিশ্বে একটি স্বাস্থ্যকর ও প্রতিশ্রুতিশীল কৌশল হিসাবে প্রমাণীত হয়েছে।
ডিভাইস আসক্তির অন্যতম নেতিবাচক দিক হলো অপ্রয়োজনীয় তথ্যে ভারাক্রান্ত হয়ে যাওয়া। ফলাফল - মানসিক অবসাদ, মনোযোগ হ্রাস। অপ্রয়োজনীয় তথ্যের প্লাবন রোধে তাই সচেতন নিয়ন্ত্রণ জরুরী। এতে মন পাবে পর্যাপ্ত বিশ্রাম, চিন্তাভাবনা হবে স্বচ্ছ।
অত্যধিক স্ক্রীন টাইম উদ্বেগ ও বিষণ্ণতার কারণ। ডিজিটাল ডায়েটিং তা রোধ করে। ব্যাক্তি অনলাইনে কি দেখছেন, পড়ছেন, শুনছেন, করছেন সে বিষয়ে সচেতনভাবে সামঞ্জস্যপূর্ণ নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার অপর নাম ডিজিটাল ডায়েটিং। যা ইতিবাচকতা, কল্যাণচিন্তা তথা মানসিক সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করে।
দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের সামনে থাকা স্থূলতা, মাংসপেশী, হাড় সংক্রান্ত সমস্যা তৈরি করে। ডিজিটাল ডায়েটিং স্ক্রিন টাইম সীমিত করে ব্যায়াম, মেডিটেশন চর্চা, সামাজিক যোগাযোগের মত স্বাস্থ্যকর অভ্যাসে উৎসাহিত করে।
স্মার্ট ডিভাইস থেকে নির্গত নীল আলো ঘুমের হরমোন মেলাটোনিন নিঃসরণে বাধা দেয়। ডিজিটাল ডায়েটিং, বিশেষ করে ঘুমানোর আগে, ঘুমের গুণমান উন্নত করতে সাহায্য করে।
ডিজিটাল ডিভাইস ব্যবহারের সিংহভাগ জুড়ে থাকে সোশ্যাল মিডিয়া। যার অবধারিত ফলাফল সামাজিক বিচ্ছিন্নতার অনুভূতি। অন্যদিকে ডিজিটাল ডায়েটিং বাস্তব যোগাযোগ, সংযোগ, সুস্থ সম্পর্ককে অগ্রাধিকার দিয়ে ইতিবাচক, সমমর্মী সামাজিক পরিবেশ নিশ্চিতে অবদান রাখে।