মন্ত্রশক্তি

মনে মনে ইতিবাচক শব্দের বারবার উচ্চারণ বা অনুরণনই হচ্ছে অটোসাজেশন। আর অটোসাজেশন বিশ্বাসে রূপান্তরিত হলেই তা হয় প্রত্যয়ন। ক্লিনিক্যাল সাইকোলজিস্টরা গবেষণা করে প্রমাণ করেছেন যে, মানুষের নার্ভাস সিস্টেম বাস্তব অভিজ্ঞতা ও কল্পনার মধ্যে কোনো পার্থক্য করতে পারে না। বাস্তব ঘটনায় যে ব্রেনওয়েভ সৃষ্টি হয়, কাল্পনিক ঘটনার ক্ষেত্রেও (অর্থাৎ কোনো ঘটনা কল্পনা করলে) সেই একই ব্রেনওয়েভ সৃষ্টি হয়। আর এই তথ্যই হচ্ছে সাফল্যের পথে নিজেকে পরিচালিত করার এক বড় অস্ত্র। কারণ সাফল্য আরও সাফল্যকে চুম্বকের মতো জড়ো করে। আপনি কল্পনায় গভীর প্রত্যয় নিয়ে নিজেকে সফল বলে ভাবুন, মুখে বারবার সাফল্যের কথা বলুন, বাস্তবেও সাফল্য এসে আপনার পদচুম্বন করবে। ইতিবাচক কথার অন্তর্নিহিত শক্তি এখানেই।

নিচের অটোসাজেশনগুলোর মধ্য থেকে বেছে নিন ১, ২ বা ৩টিকে। প্রতিদিনের অনুষঙ্গ করে তুলুন। পার্থক্য দেখে আপনি নিজেই অবাক হয়ে যাবেন।

 

  • রাগ-ক্ষোভ-অভিমান অন্যের চেয়ে নিজের ক্ষতিই করে বেশি। আমি সবসময় এসব থেকে দূরে থাকব।
  • আমি প্রতিদিন আত্মপর্যালোচনা করছি। ভুলগুলো শুধরে আমার ব্যক্তিত্ব ও কাজ হয়ে উঠছে সুন্দর থেকে সুন্দরতর।
  • আমি ভালো ছাত্র। কৌতূহল ও শেখার আগ্রহ নিয়ে আমি সবকিছুকে দেখছি। ফলে সাধারণ সচরাচর বিষয় থেকেও শিখছি।
  • আমি বাস্তববাদী ও কর্মমুখী। ভুল বা ব্যর্থতার ছাই থেকেও আমি খুঁজে নিতে পারি নতুন সম্ভাবনার রত্ন।
  • সাফল্য বিঘ্নকারী কোনো সম্পর্কে আমার প্রয়োজন নেই। নেতিবাচক, অলস, অসদাচারী ও লক্ষ্যহীন সঙ্গী থেকে আমি দূরে থাকব।
  • ব্যর্থরা অভিমান ও অভিযোগ করে আর সফলরা সমাধানের জন্যে কাজে লাগায় সাহস, বুদ্ধি ও শ্রম। আমি সফল হিসেবে নিজেকে প্রমাণ করব।
  • আমার প্রবৃত্তির নিয়ন্ত্রণ আমারই হাতে। টিভি, মোবাইল, গেমস বা যেকোনো আসক্তিকে আমি অনায়াসে ‘না’ বলতে পারি।
  • আমি প্রো-একটিভ। অন্যের নেতিবাচক কথা, মন্তব্য ও আচরণের প্রভাব থেকে নিজেকে সবসময় মুক্ত রাখব।
  • আমি সবসময় সঙ্ঘবদ্ধ থাকব। সৎসঙ্ঘের ছায়ায় আমার মেধা পুরোপুরি বিকশিত হবে।
  • যখন আমি পড়বো তখন প্রশান্ত, সজাগ ও মনোযোগী থাকব। প্রতিদিন আমার পড়া দ্রুত থেকে দ্রুততর হবে। যা পড়ব তা সহজেই বুঝবো ও মনে রাখব। যখন প্রয়োজন তখন তা সুন্দরভাবে বলতে ও লিখতে পারব।
  • আমার স্মরণশক্তি বাড়ছে। আমি যা পড়ব বা শুনব তার প্রয়োজনীয় সব অংশ অনায়াসে মনে রাখব।
  • সবসময় আমি কাজে ডুবে থাকব। যে কাজ আজ করা যায় তা আজই করব। যত কাজ করব তত আমার কর্মক্ষমতা বাড়বে।
  • বোকারা অন্যের সাহায্যের অপেক্ষায় থাকে। আমি বুদ্ধিমান। আমার যা আছে তা দিয়েই শুরু করব।
  • আমি গালগল্প ও আড্ডা থেকে দূরে থাকব। আমার সময় ব্যয় করব আমার রুটিন অনুসারে।
  • বিষণ্নতা দুর্বলচিত্তদের রোগ। আমি বিশ্বাসী। বিশ্বাসীরা সবসময়ই আনন্দলোকে বিচরণ করে।
  • আমি আমার মেধা, শ্রম, অর্থ ও সময়কে সেবায় রূপান্তর করব। প্রাকৃতিক নিয়মেই এর বহুগুণ প্রতিদান পাবো।
  • আমার মনকে সবসময় বর্তমানে রাখব। ফলে অতীতের গ্লানি ও ভবিষ্যতের আশংকা থেকে মুক্ত থাকব।
  • আমি প্রতিদিন ভোরে মেডিটেশন করব। মেডিটেশনের প্রশান্তি সারাদিন বয়ে বেড়াব। ফলে আমার চিন্তা, কথা, সিদ্ধান্ত ও আচরণ সঠিক হবে।
  • সকল পরিস্থিতিতে সবসময় বলুন- ‘প্রভু! তোমাকে ধন্যবাদ। সবকিছুর জন্যেই আমি কৃতজ্ঞ।’
  • আমি একা নই। আমি বিশ্বাসী। স্রষ্টা আমার সাথে রয়েছেন। অতএব আমি বিজয়ী হবো।
  • পরীক্ষা চলাকালে আমি প্রশান্ত ও সজাগ থাকব। প্রশান্ত মনে আত্মপ্রত্যয়ের সাথে প্রতিটি প্রশ্নের দ্রুত সঠিক উত্তর লিখব। যা পড়েছি তা পরীক্ষার হলে বসে অনায়াসে মনে করব। পরীক্ষার সময় অনায়াসে আমি আমার মেধার চমৎকার প্রয়োগ করব।
  • আমি সবসময় সুন্দর শব্দ ও বাক্য ব্যবহার করে কথা বলব। বিনয় ও ভালো ব্যবহার দিয়ে আমি সবাইকে জয় করব।
  • সহজ স্বতঃস্ফূর্ততায় প্রত্যয় ও সাহসের সঙ্গে আমি ভাইভাবোর্ডের মুখোমুখি হবো। স্পষ্টভাবে বিনয়ের সঙ্গে প্রতিটি প্রশ্নের সঠিক উত্তর দেবো। আমার সাবলীল, বুদ্ধিদীপ্ত উপস্থাপনা সবাইকে মুগ্ধ করবে।
  • আমি সবসময় স্বতঃস্ফূর্তভাবে সঠিক সময়ে সঠিক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করব।
  • যেকোনো অন্যায় কামনাকে আমি এখন অনায়াসে ‘না’ বলব। আত্মশুদ্ধির পথে আমি অটল থাকব।
  • ফলাফল নিয়ে আমি কখনো অস্থির হবো না। সঠিক প্রক্রিয়ায় কাজ করে যাবো।
  • আমি মুক্ত মনে নতুন জ্ঞান গ্রহণ করতে পারি। নতুন জ্ঞান নিজের ও মানুষের কল্যাণে ব্যবহার করব।
  • আমার মস্তিষ্ক এক অনন্য সুপার জৈব কম্পিউটার। আমার সকল সাফল্যের নির্ভরযোগ্য সহযোগী।

শিক্ষার্থী প্রত্যয়ন

আমি শিক্ষার্থী! আলোর অভিযাত্রী! বড় কিছু করার জন্যেই আমি পৃথিবীতে এসেছি! নিয়মিত মেডিটেশন করব। মনোযোগ দিয়ে পড়ব। রুটিন অনুসরণ করব। সময় ও মেধাকে ভালো কাজে লাগাব। সাফল্য আমারই!