আপনি কি সত্যিই চান?

ভাবছেন এ আবার কেমন প্রশ্ন? চাইবো না কেন? সফল হতে কে না চায়? চায় সবাই। কিন্তু অধিকাংশ মানুষের কাছে সফল হতে চাওয়াটা শুধু চাওয়াতেই সীমাবদ্ধ। তারা চান মাঝে মাঝে পড়ালেখা করব, টিভি-সিনেমা দেখব, আড্ডা দেবো, গান শুনব, গল্পের বই পড়ব। তারপর যদি এ প্লাস না পাই তাহলে কী আর করা। জীবনটাকে তো উপভোগ করতে হবে! কিন্তু একজন ফার্স্টবয় কি এভাবে ভাবে? ভাবে না। তার কাছে ফার্স্ট হওয়াটাই গুরুত্বপূর্ণ। এর জন্যে যা করা দরকার, যেভাবে করা দরকার এবং যা বর্জন করা দরকার সে তা-ই করে।

নিজেকে জিজ্ঞেস করুন, যে সাফল্যের মনছবি আমি দেখছি সে সাফল্যকে বরণের প্রস্তুতি কি আমি নিচ্ছি? আর এ প্রস্তুতির অংশ হিসেবে সচেতন হোন এ সময়খাদকগুলোর ব্যাপার

বন্ধুর ফাঁদ পাতা ভুবনে

ছাত্রজীবনে বন্ধুদের প্রভাব অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারো কারো জীবন প্রভাবিত হয় প্রধানত বন্ধুদের দ্বারাই। যার সাথে আপনার যোগাযোগ বেশি হবে তার দ্বারাই আপনি প্রভাবিত হবেন বেশি। অধিকাংশের জীবনধারা তাদের ঘনিষ্ঠ বন্ধুদের মতোই হয়। আপনার বন্ধুরা যদি মেধাবী, সহানুভূতিশীল সু-স্বাস্থ্য ও সুন্দর ব্যক্তিত্বের অধিকারী হয়, তাহলে আপনারও তা অর্জন করার সম্ভাবনা থাকবে। আপনার বন্ধুরা যদি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গির বা রূঢ় আচরণে অভ্যস্ত হয়, লক্ষ্যহীন জীবনে ভেসে বেড়াতে থাকে, ড্রাগ, ধূমপান ও অন্যান্য বদ অভ্যাস বা অনাচার-অত্যাচারে লিপ্ত থাকে বা মাস্তান ও সন্ত্রাসীদের সাথে জড়িত থাকে, তাহলে এ ধরনের বন্ধুরা আপনার জীবনের সুমহান লক্ষ্য থেকে আপনাকে বিচ্যুত করতে পারে। কোনো বন্ধু যদি আপনার জন্যে আনন্দের কারণ না হয়, যদি বেশিরভাগ সময়ই তার সাথে তর্ক-বিতর্কে কেটে যায়, তাহলেও আপনার আচরণে কিছু পরিবর্তন আনা উচিত। হয় তার সাথে দেখা করার সময় কমিয়ে দিন বা কিভাবে তার সাথে মতৈক্য সৃষ্টি করা যায় তা খুঁজে বের করুন। কারণ, ক্রমাগত মতানৈক্য আপনার মানসিক প্রশান্তি বিনষ্টের কারণ হতে পারে।

আসলে সহপাঠী মানেই বন্ধু নয়। সুসম্পর্ক থাকবে সবার সাথে কিন্তু বন্ধুত্ব হবে তাদের সাথেই যাদের জীবন চেতনা ও লক্ষ্যের সাথে আপনার মিল রয়েছে। আর সবসময় সৎসঙ্ঘে থাকুন। সৎ চেতনায় সঙ্ঘবদ্ধ মানুষই জীবনে ১ম হয়। এজন্যে বন্ধুত্বের ক্ষেত্রে নিচের বিষয়গুলো মনে রাখুন:

  • বন্ধু নির্বাচনে সতর্ক থাকুন। চিন্তা, মত ও লক্ষ্যে মিল রয়েছে এমন কারো সাথেই বন্ধুত্ব গড়ে তুলুন। সৎসঙ্ঘে নিবেদিত সদস্যদের বন্ধু হিসেবে অগ্রাধিকার দিন।
  • ওয়াদা ও আমানতদারি রক্ষা করুন।
  • প্রতিদানের আশা না করেই সাধ্যমতো সহযোগিতা করুন।
  • অন্যের প্ররোচনায় সিদ্ধান্ত নেবেন না; সম্পর্কচ্ছেদ করবেন না।
  • বোকা ও খারাপ মানুষের সাথে বন্ধুত্ব করা থেকে বিরত থাকুন। ক্ষতিকর বন্ধুদের কৌশলে এড়িয়ে চলুন।
  • অতিরিক্ত বন্ধুবাৎসল্য দেখাতে গিয়ে নিজের জীবনের লক্ষ্যকে বিসর্জন দেবেন না।

 

মোবাইল

আধুনিক জীবনের একটি অপরিহার্য অনুষঙ্গ হচ্ছে মোবাইল। কিন্তু আপনি কি সবসময় শুধু প্রয়োজনেই মোবাইল ব্যবহার করছেন? নাকি দিনের একটা বড় সময় কেটে যাচ্ছে অপ্রয়োজনীয় মোবাইল আলাপে? মাত্রাতিরিক্ত মোবাইল আপনার মনোযোগের ক্ষমতাকে কমিয়ে দিতে পারে। শুধু প্রয়োজনের কলগুলোই করুন। কোনো মিসকলের বিপরীতে কল না করাই ভালো। কারো যদি বেশি প্রয়োজন হয় তাহলে সে-ই আপনাকে কল করবে।

টিভি না বোকার বাক্স

টিভিকে বলা হয় বোকার বাক্স। কারণ মাত্রাতিরিক্ত টিভি দেখলে বোকা হয়ে যেতে হয়, সৃষ্টি হয় বিনোদন আসক্তি। এটা এখন বিজ্ঞানীদেরও কথা। ইউনিভার্সিটি অব মেরিল্যান্ডের ড. মাইকেল মিলার এক গবেষণায় দেখেছেন, টিভির উত্তেজক দৃশ্য দেখার ফলে রক্তচাপ বাড়ে এবং দেহে স্ট্রেস হরমোন তৈরি হয়। যার প্রভাব থাকে কমপক্ষে ৪৫ মিনিট ধরে। তাই স্রেফ বিনোদনের মাধ্যম নয়, টিভিকে কাজে লাগান আপনার শিক্ষামূলক অভিজ্ঞতা লাভের সুযোগ হিসেবে।