মেডিটেশন : হৃদরোগ নিরাময়ে

ডাক্তারদের একসময় ধারণা ছিল, একবার যদি আর্টারি ব্লকড হওয়া শুরু করে তাহলে এনজিওপ্লাস্টি বা বাইপাস ছাড়া কোনো উপায় নাই। প্রথম এই ধারণা ভেঙে দেন ডা. ডীন অরনিশ। তিনি সানফ্রান্সিসকোর বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

১৯৮৭ সালে ৪৮ জন রোগীকে দুই ভাগে ভাগ করে ডা. অরনিশ এই গবেষণাটি চালান। এক গ্রুপের ২৮ জনকে একবছর ধরে কম চর্বিযুক্ত খাবার দেয়া হয়, মেডিটেশন ও যোগব্যায়ামের অনুশীলন করানো হয়। সেইসাথে ধূমপান বর্জন এবং রোগীদেরকে মমতা ও সহানুভূতিপূর্ণ মানসিক অবস্থায় রাখার চেষ্টা করা হয়।

অন্যদিকে বাকি ২০ জনকে আমেরিকান হার্ট এসোসিয়েশন নির্দেশিত পথ্যবিধি এবং প্রচলিত চিকিৎসার অধীনে রাখা হয়। একবছর পর দুই গ্রুপের ওপরই পরীক্ষা চালিয়ে দেখা যায়, ১ম গ্রুপের রোগীদের আর্টারিতে ব্লকেজের পরিমাণ তো বাড়েই নি, বরং কমেছে এবং হার্টে রক্ত চলাচল বেড়েছে। অন্যদিকে প্রচলিত চিকিৎসা চালিয়ে গেলেও দ্বিতীয় গ্রুপের প্রায় সবারই ব্লকেজের পরিমাণ বেড়েছে। আরেকটি উল্লেখযোগ্য দিক হলো, যে রোগীরা বেশি দিন ধরে এ প্রক্রিয়া অনুশীলন করেছেন, অন্যদের চেয়ে তারা বেশি উপকার পেয়েছেন।

১৯৯৮ সালে জার্নাল অব আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনে গবেষণাটি সম্পর্কে বিস্তারিত রিপোর্ট প্রকাশিত হয়।

২৩টি গবেষণার একটি মেটা এনালিসিস থেকে প্রফেসর লিন্ডেল, স্টসেল এবং মরিস দেখেন, প্রচলিত চিকিৎসার সাথে সুস্থ জীবনদৃষ্টি, খাদ্যাভ্যাস, ব্যায়াম, মেডিটেশন ইত্যাদি যোগ করা হয়েছে এমন সব ক্ষেত্রে দেখা গেছে, রোগীর মৃত্যুর হারকে কমিয়ে ফেলা গেছে প্রায় ৪১%। আবার হার্ট এটাকের হারও কমেছে ৪৬%।