ওবেসিটি বা স্থূলতা হলো আধুনিক সময়ের মহামারি, বিশ্বব্যাপী প্রায় ৩৭ শতাংশ মানুষ যার শিকার। বাংলাদেশে এই হার প্রতি পাঁচ জনে এক। বিজ্ঞানীদের মতে, করোনারী হৃদরোগ, উচ্চ রক্তচাপ, স্ট্রোক, টাইপ-২ ডায়াবেটিস, ক্যান্সার, হাই কোলেস্টেরল, অস্টিও-আথ্রাইটিস- এসব রোগের একটি বড় কারণ দীর্ঘদিনের বাড়তি ওজন।
বাড়তি ওজনের ব্যাপারে মানুষের মধ্যে সচেতনতা দিন দিন বাড়ছে। তবে ওজন কমাতে যে প্রক্রিয়া অনেকে অবলম্বন করছেন বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই তা তেমন একটা কার্যকর নয়, হলেও টেকসই হয় না। উপরন্তু আশংকা থাকে ক্ষতিরও।
জেনে নিন নিরাপদে ওজন কমাতে ৭ টিপস:
ভাত ও রুটি কম পরিমাণে খাবেন। ছবিসূত্র: https://tv9bangla.com
এক কাপ লাল চালের ভাত কিংবা দুটো পাতলা লাল আটার রুটি; সাথে পর্যাপ্ত সবজি, একটা ডিম, সালাদ ও ফল- আহার সারুন এসব দিয়েই।
দুপুরে ভাত-রুটির সাথে খেতে পারেন ভর্তা, পর্যাপ্ত সবজি, এক টুকরো মাছ, ডাল ও সালাদ। রাতে আধা কাপ ভাত কিংবা একটি পাতলা রুটি।
যদি ওজন খুব বেশি থাকে এবং দ্রুত ওজন কমাতে চান তাহলে কাঙ্ক্ষিত ওজন না আসা পর্যন্ত রাতে ভাত বা রুটি বন্ধ রাখুন। কাঙ্ক্ষিত ওজন হয়ে গেলে আবার অল্প ভাত বা পাতলা রুটি খেতে পারেন।
পৃথিবীতে যে ক’টা জাতি স্লিম, স্মার্ট এবং চমৎকার ফিগারের অধিকারী তারা রাতের খাবার খেয়ে নেয় সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে। আপনিও যদি সন্ধ্যায় রাতের খাবার খেয়ে নেন তাহলে দ্রুত ওজন কমাতে পারবেন।
রাতের খাবার খান সন্ধ্যা ৭টার মধ্যে খেয়ে ফেলুন। ছবিসূত্র: www.archanaskitchen.com
দেরি করে ঘুমানোর অভ্যাস থাকলে রাতে ক্ষুধা লাগতে পারে। এক্ষেত্রে পরিকল্পিতভাবে খেতে হবে।
বিকেলে কিছু বাদাম বা ভেজানো বীজ খেতে পারেন, সাথে দুটো খেজুর। সন্ধ্যায় একটি রুটি বা অল্প ভাতের সাথে সবজি। রাত ৯/১০টার দিকে ৪ চা চামচ অ্যাপেল সাইডার ভিনেগার এক গ্লাস কুসুম গরম পানির মধ্যে মিশিয়ে খেতে পারেন।
ওজন ঠিক রাখতে বাদ দিতে হবে রাতে মাছ, মাংস খাওয়ার অভ্যাস। তবে দীর্ঘদিনের অভ্যাস চট করে ছাড়াটা বিপজ্জনক হতে পারে। অভ্যাস ছাড়ুন রয়েসয়ে, ধাপে ধাপে। দেখা যাবে একটা সময় আর রাতে মাছ, মাংস, ডিম না খেয়েও আপনি ঠিক থাকছেন।
রাতে মাছ/মাংস যত সম্ভব খাবেন না।
রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট অর্থাৎ চিনি, সাদা চাল, সাদা ময়দা- এগুলো ওজন বাড়ায়। ওজন কমাতে চাইলে অবশ্যই রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট খাওয়া বন্ধ করতে হবে।
চিনি, সাদা চাল, সাদা ময়দা- এগুলো মতো রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট পরিহার করুন
চিনির বদলে গুড়, সাদা চালের বদলে লাল চাল এবং সাদা ময়দার পরিবর্তে লাল আটা খেতে পারেন।
পোলাও বিরিয়ানী কাচ্চি তেহারী কাবাব ফাস্ট ফুড- মেদস্থূলদের প্রিয় খাবার! এসব চর্বিদার তৈলাক্ত খাবারে থাকে প্রচুর তেল ঘি ডালডা টেস্টিং সল্ট রেডমিট ও রিফাইন্ড কার্বোহাইড্রেট।
তৈলাক্ত খাবার বর্জন করুন। ছবিসূত্র: https://medium.com
শুধু ওজন কমাতেই নয়, সুস্বাস্থ্যের প্রয়োজনেও আপনার উচিৎ হবে এগুলো যথাসম্ভব কম খাওয়া।
ওজন বৃদ্ধির একটি অন্যতম কারণ রাতের দাওয়াত। বিয়ে কিংবা জন্মদিন- সেলিব্রেশন যেন রাতেই করতে হবে! আর এসব দাওয়াতে যেসব খাবার দিয়ে আপ্যায়ন করা হয় তার বেশিরভাগই তেলমশলা চর্বিদার গুরুপাক খাবার। ফলে যত এসব দাওয়াতে অংশ নেবেন ততো পরবেন মেদস্থূলতার খপ্পরে।
অবশ্য সামাজিকতার খাতিরে কখনো কখনো এসব দাওয়াত এড়ানো সম্ভব হয় না। অংশ যদি নিতেই হয় তো পরিহার করুন ভুরিভোজ। সবজি বা সালাদ দিয়ে উদরপূর্তিতে সমাজরক্ষার পাশাপাশি হবে ওজন নিয়ন্ত্রণও।
রোজা বা উপবাসকালে অটোফেজি নামক একটি প্রক্রিয়ায় বাড়তি মেদ কোলেস্টেরল ও টক্সিন থেকে শরীর মুক্ত হয়। অটোফেজি চমৎকার হবে যদি আপনি টানা ১২-১৬ ঘণ্টা না খেয়ে থাকেন।
রোজা বা উপবাস করুন। দেহ টক্সিনমুক্ত হবে। ছবিসূত্র: https://www.dainikgopalganj.com
নিয়মিত সপ্তাহে এক-দুইদিন রোজা রাখুন। দেহ টক্সিনমুক্ত হবে, আপনি ঝরাতে পারবেন বাড়তি ওজন।