সমস্যা থেকে সম্ভাবনায়

published : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১

কৃষকের বুড়ো গাধাটি পা ফসকে পড়ে গেল বাড়ির পাশের মজে যাওয়া কুয়োয়। পড়েই জুড়ে দিলো তারস্বরে চিৎকার। দিন নেই রাত নেই সারাক্ষণ শুধু ব্যা, ব্যা। কৃষকের ঘুম হারাম হয়ে গেল। বাড়িতে লোকজন থাকতে পারছে না, ছেলেমেয়েরা পড়তে পারছে না, প্রতিবেশীরা শান্তিতে কাজ করতে পারছে না। মহাবিরক্ত হয়ে কৃষক সিদ্ধান্ত নিলো কুয়োটা বুজিয়ে ফেলবে। এতে বুড়ো গাধাটা মরবে। জায়গাটাও কাজে লাগবে। কিন্তু এত মাটি কোথায় পাবে? শেষমেশ প্রতিবেশীদের শরণাপন্ন হলো। বাড়ি বাড়ি গিয়ে বললো যার যত ময়লা-আবর্জনা আছে সব যেন ঝুড়ি ভরে নিয়ে আসে তার বাড়ির কুয়োতে ফেলার জন্যে। সবাই মহা উৎসাহে বাড়ির আনাচে কানাচে যত আবর্জনা আছে সব এনে ধামায় ভরে ফেলতে লাগল কুয়োয়। প্রথম কিছুক্ষণ গাধা বুঝলোই না কী ঘটতে চলেছে। বিস্ময়ের ঘোর কাটতেই সে বুঝল সবাই মিলে তাকে আবর্জনাচাপা দিতে চাইছে। সে-ও দমবার পাত্র নয়। বুদ্ধি ঠিক করে ফেললো। একেক গামলাভর্তি ময়লা পড়ে আর গাধা পিঠ ঝাঁকিয়ে ময়লাটুকু ঝেড়ে ওটার ওপরে উঠে দাঁড়ায়। এই করে করে একসময় কুয়োটি যখন ভরে গেল একলাফে গাধা বেরিয়ে এল বাইরে। যে ময়লা ছোঁড়া হয়েছিল তাকে কবর দেবার জন্যে সে ময়লাকেই সে ব্যবহার করল তার মুক্তির অবলম্বন হিসেবে।


আপনার প্রতিকূলতাই রূপান্তরিত হতে পারে সম্ভাবনায়, যদি আপনি মনের কাছে হেরে না যান। কারণ পরিবেশ-পরিস্থিতি নয়, মানুষ প্রথম হেরে যায় তার মনের কাছে। আর প্রতিকূলতা আপনাকে গড়ার প্রয়োজনেই। কারণ সমস্যা-বাধার মুখে না পড়লে আপনার অর্ন্তগত শক্তি জেগে ওঠার পথ পাবে না। এটাই সফল হবার প্রক্রিয়া। সফল হতে হলে তাই বাসায় পড়ার পরিবেশ নেই, হোস্টেলে সিট সমস্যা, আর্থিক টানাপোড়েন, টিউশনি করতে ভালো লাগে না, প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ি, ভালো সাবজেক্টে  চান্স পাইনি, টিচার ভালো না বা উৎসাহ দেয়ার কেউ নেই এ জাতীয় অজুহাত না দিয়ে প্রতিটিকেই গ্রহণ করুন চ্যালেঞ্জ হিসেবে, ভুল থেকে শেখার সুযোগ হিসেবে।