রক্তদানের উপকার

আপনি কি জানেন, রক্তদান করলে রক্তচাপ স্বাভাবিক হওয়াসহ হৃদরোগ ও অন্যান্য স্বাস্থ্যঝুঁকি কমে যায়?

হৃদরোগ ও হার্ট এটাকের ঝুঁকি কমে

সিএনএন পরিচালিত এক গবেষণায় দেখা যায়, রক্তে যদি লৌহের পরিমাণ বেশি থাকে তাহলে রক্ত ঘন হয়, কোলেস্টেরল তৈরি হওয়ার হারও ক্রমান্বয়ে বাড়তে থাকে। ফলে এর বেশি মাত্রার উপস্থিতি হার্ট এবং সার্কুলেটরি সিস্টেমকে ক্ষতিগ্রস্ত করে। গবেষকদের ধারণা, রক্ত দিলে দাতার শরীরে উচ্চমাত্রার লোহার স্তর কমে যায়।

জার্নাল অব দি আমেরিকান মেডিকেল এসোসিয়েশনে প্রকাশিত এই রিপোর্টটিতে বলা হয়, ৪৩ থেকে ৬১ বছর বয়সী ব্যক্তিরা ছয় মাসে অন্তত একবার রক্ত দিলে তাদের হৃদরোগ বা পক্ষাঘাতে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা অনেকটাই কমে যায়। ফিনল্যান্ডের ২৬৮২ জনের ওপর একটি গবেষণা চালিয়ে দেখা গেছে—যারা নিয়মিত রক্ত দেয় তাদের হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি ৮৮ শতাংশ কম এবং স্ট্রোকসহ অন্যান্য মারাত্মক হৃদরোগের ঝুঁকি ৩৩ ভাগ কম।

সুস্থতা যাচাই ও ওজন কমানো

রক্ত দিতে এসে একজন রক্তদাতা তার সার্বিক সুস্থতাকে যাচাই করে নিতে পারেন। ফলে প্রতি চার মাসে এক বার করে বছরে তিন বার হয়ে যাচ্ছে তার ব্লাড প্রেশার, পালস লেভেল থেকে শুরু করে পাঁচটি রক্তরোগের স্ক্রিনিং যা তাকে আশ্বস্ত করে তার সুস্থতা সম্পর্কে। প্রতি পাইন্ট (এক গ্যালনের আট ভাগের এক ভাগ) রক্ত দিলে ৬৫০ ক্যালরি করে শক্তি খরচ হয়। অর্থাৎ ওজন কমানোর ক্ষেত্রেও এটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।

প্রাণবন্ততা ও কর্মক্ষমতা বৃদ্ধি

রক্তদান করার সাথে সাথে আমাদের শরীরের মধ্যে অবস্থিত বোন ম্যারো নতুন কণিকা তৈরির জন্যে উদ্দীপ্ত হয়। দান করার মাত্র ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই দেহে রক্তের পরিমাণ স্বাভাবিক হয়ে যায়, আর লোহিত কণিকার ঘাটতি পূরণ হতে সময় লাগে চার থেকে অাট সপ্তাহ। আর এই পুরো প্রক্রিয়া আসলে শরীরের সার্বিক সুস্থতা, প্রাণবন্ততা আর কর্মক্ষমতাকেই বাড়িয়ে দেয়।

ক্যান্সারের ঝুঁকি কমে

মিলার-কিস্টোন ব্লাড সেন্টারের এক গবেষণায় দেখা যায়, যারা বছরে দুই বার রক্ত দেয়, অন্যদের তুলনায় তাদের ক্যান্সারে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি কম। বিশেষ করে ফুসফুস, লিভার, কোলন, পাকস্থলী ও গলার ক্যান্সারের ঝুঁকি নিয়মিত রক্তদাতাদের ক্ষেত্রে অনেক কম বলে দেখা গেছে। চার বছর ধরে ১২০০ লোকের ওপর এ গবেষণা চালানো হয়।