লকডাউন কি মহামারি প্রতিরোধ করতে পারে?

রামপুরার একটি বস্তি এলাকার বাসিন্দা মাহমুদা আক্তার বাসাবাড়ির কাজ হারিয়েছেন, পরিবহন শ্রমিক স্বামীও বেকার।

পেটে যখন খাবার জুটছে না তখন সন্তানের দুধের খরচ জোগাবে কে এমন প্রশ্ন মাহমুদার।
 

তিনি বলছিলেন, "আমরা তো কারো কাছে হাত পাততে পারি না। স্বামী-স্ত্রী দুইজনই এখন ঘরে বসা। কাজ নাই। আমাদের অবস্থা খুবই খারাপ। আমরা খুবই কষ্টে আছি।"

তিনি বলছেন, এখন প্রতিদিন ডাল-ভাতই তাদের প্রধান খাবার। সেটাও দুইবেলা জোটে না।

"বাচ্চারা আর ডাইল-ভাত খাইতে চায় না। ছোট বাচ্চাটার দুধের টাকা নাই। এইজন্যে ডাবল করে পানি মিশায় খাওয়াইতেছি। আমি তো মা। এই দুঃখ কই রাখি!"

মাহমুদার গল্প উঠে এসেছে বিবিসির পাতায়।

মাহমুদার মতো লক্ষ লক্ষ খেটে খাওয়া মানুষ এবার লকডাউন নামের এক অভূতপূর্ব পরিস্থিতির নির্মম শিকার হয়েছিলেন।

লকডাউন। নভেল করোনাভাইরাসের শুরু থেকেই বিশেষজ্ঞদের একটা অংশ জোর গলায় বলছিলেন “মহামারি ঠেকাতে হলে এর বিকল্প নেই!”

প্রশ্ন হলো- লকডাউন কি আসলেই মহামারি প্রতিরোধ করতে পারে?

লক ডাউন না করা স্টেটে মৃত্যু হয়েছে কম!

মার্চের শেষাশেষি যুক্তরাষ্ট্রের নিউ ইয়র্ক, নিউ জার্সি, কানেক্টিকাটসহ বিভিন্ন রাজ্য একের পর এক লকডাউন, কারফিউ, ব্যবসা ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ ঘোষণা করে।

সব ধরনের সমাবেশ স্থগিত ও ভ্রমণ নিষিদ্ধ করে।

উদ্দেশ্য- কোভিড-১৯ প্রতিরোধ।

জুন ২০২০। আমেরিকান ইনস্টটিউট ফর ইকনমিক রিসার্চ একটি জরিপ পরিচালনা করে যুক্তরাষ্ট্রের যেসব স্টেট কঠোর লকডাউন আরোপ করেছে বনাম যেসব স্টেট করে নি, লকডাউনের ১০০ দিনের মাথায় এসে তাদের কার কী অবস্থা সেটা জানতে।


১৯ আগস্ট পর্যন্ত যুক্তরাষ্ট্রের বিভিন্ন অঙ্গরাজ্যে প্রতি লাখে করোনায় মৃত্যু (সূত্র- স্ট্যাটিসটিকা)

দেখা গেল লক ডাউন করা স্টেটগুলোর বেকারত্বের হার ১৩.২%। অন্যদিকে লক ডাউন না করা স্টেটগুলোর বেকারত্বের হার ৭.৮%।

কিন্তু তার চেয়েও উল্লেখযোগ্য- লক ডাউন করা স্টেটগুলোয় এসময় যে পরিমাণ মৃত্যু হয়েছে, লক ডাউন না করা স্টেটে হয়েছে তার চেয়ে অনেক অনেক কম!

জুনের ১৭ তারিখ পর্যন্ত নর্থ ডেকোটা, সাউথ ডেকোটা, নেব্রাস্কা, আইওয়া, আরকানসাস, ওকলাহোমা, ওয়াইমোং এবং উটাহ- লক ডাউন না করা এ রাজ্যগুলোতে মৃত্যুর সংখ্যা মাত্র ১৮০৮।

যেখানে বাকি সব রাজ্য যারা লক ডাউন করেছিল সেখানে মৃত্যুর সংখ্যা ১ লক্ষ ১৬ হাজার ৫০১।

প্রতি ১০ লক্ষে আক্রান্ত এবং মৃত্যুর হারেও পার্থক্যটা দিবালোকের মতো পরিষ্কার-

 আক্রান্তমৃত
লকডাউন করা স্টেট৫২০৮১০৩
লকডাউন না করা স্টেট৬৭৯১৩৭৫

ভারত- প্রতিমাসে এমনিতেই যে দেশে মারা যায় সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ

ভারত। ২৫ মার্চ থেকে আনুষ্ঠানিক লকডাউন আরোপের মধ্য দিয়ে ১৩৭ কোটি মানুষের দেশটি পরিণত হয় বিশ্বের বৃহত্তম ‘লকড ডাউন’ রাষ্ট্রে।

তখন পর্যন্ত কোভিড-১৯ এ ভারতে মৃতের সংখ্যা ছিল মাত্র ১১।

কিন্তু ঘনবসতির কারণে সংক্রমণ খুব দ্রুত ছড়াবে আশঙ্কায় প্রথমে ২১ দিন, পরে ৪২ দিন পর্যন্ত বহাল থাকে লকডাউন।

এসময় ভারতের ৩৭ কোটি কর্মী দিনে গড়ে ১০ হাজার কোটি রুপি উপার্জন হারান।

সাড়ে চার কোটি পরিযায়ী শ্রমিক বেকার হয়।

আগুন গরম গ্রীষ্মে মহাসড়কের শত শত মাইল হেঁটে তাদের শহর ছাড়ার দৃশ্য নাড়া দেয় হৃদয়বান মানুষকে।

দিন আনা দিন খাওয়া এই মানুষগুলোর বিরুদ্ধে অভিযোগ- তারা না কি করোনা ছড়াবে।

বাস্তবে কী হলো?

খেটে খাওয়া এই মানুষরাই করোনা থেকে সবচেয়ে সুরক্ষিত প্রমাণিত হলো।

দিল্লি, মুম্বাই বা কলকাতা- ভারতে করোনাভাইরাসের এই হটস্পটগুলোতে বস্তি এলাকার মানুষই সবচেয়ে কম আক্রান্ত হয়েছিল।


করোনা মোকাবেলায় বস্তিই সেরা! (ছবিসূত্র- Quartz India)

গত আটমাসে ভারতে কোভিডে মৃত্যু হয়েছে ৭০ হাজার মানুষের!

অথচ বিশাল এই দেশটিতে প্রতিমাসে এমনিতেই মারা যায় সাড়ে সাত লক্ষ মানুষ!

আবার প্রতি ১০ লক্ষের তুলনায় যদি কোভিড মৃত্যুর হিসাব করা হয় তাহলেও আমেরিকা বা ইউরোপের তুলনায় ভারতে মৃত্যু কম!

দেশআক্রান্তমৃত্যু
স্পেন৮৭২৩৬১৬
যুক্তরাজ্য৪৭৫৯৬০৯
ইতালি৪২৬৩৫৮৬
যুক্তরাষ্ট্র১৭৪৯৮৫৩৬
ভারত২১৫২৪০

তুরস্ক – লক ডাউন না করেও যে দেশটি ছিল সুরক্ষিত

করোনাভাইরাস মহামারি যখন ইউরোপের একের পর এক দেশকে নাস্তানাবুদ করছিল, তখন ইউরোপেরই একটি দেশ ছিল বেশ সুরক্ষিত! এবং সেটা পুরোপুরি লকডাউন না করেই।

তুরস্ক। প্রথমদিকে সংক্রমণ যখন দ্রুত বাড়ছিল তখন অনেকেই বলছিলেন, তুরস্কের অবস্থা হয়তো ইটালির মতো হয়ে উঠতে পারে।

কিন্তু আক্রান্তদের দ্রুত শনাক্ত এবং তাদের সংস্পর্শে আসা মানুষদের কোয়ারেন্টিনে রেখে আক্রান্ত এবং মৃত- দুটি সংখ্যাকেই বেশ সফলভাবে নিয়ন্ত্রণ করে তুরস্ক।

সংক্রমণের এই ৭ম মাসেও তুরস্কে মৃত্যুর সংখ্যা প্রতি দশ লাখে মাত্র ৭৩ যা ইউরোপের হটস্পট দেশগুলোর তুলনায় অনেক কম!

লক ডাউন করা-না করা সমান

প্রশ্ন হচ্ছে ‘কেন?’

আসলে সংক্রমণ প্রতিরোধ করার ক্ষেত্রে লকডাউন বা এজাতীয় পদক্ষেপের কোনো প্রভাব আছে কি না তা নিয়ে এক চমকপ্রদ তথ্য উপস্থাপন করেন ন্যাশনাল ব্যুরো অব ইকনমিক রিসার্চের তিনজন গবেষক।

যুক্তরাষ্ট্রের ২৫টি রাজ্য এবং বিশ্বের ২৩টি দেশের কোভিড মৃত্যুর উপাত্ত বিশ্লেষণ করে তারা বলেন-

“যখন কোনো অঞ্চলে কোভিডে মৃত্যুর সংখ্যা ২৫ অতিক্রম করে, তার মাসখানেক পর থেকেই সেখানে দৈনিক মৃত্যুর হার কমতে থাকে।

এবং এটা ঘটেছে আমাদের গবেষণার ৫০টি ক্ষেত্রেই, যেখানে একেক জায়গায় একেকরকম পদক্ষেপ নেয়া হয়েছিল। মানে কোথাও হয়তো কঠোর লকডাউন। আবার কোথাও কোনো লকডাউনই নেই।

কিন্তু ফলাফল সব জায়গায় একইরকম।

ভাইরাস না, লক ডাউনের কারণে যখন মারা যাচ্ছে মানুষ!

তারপরও লকডাউনের মতো চরম পদক্ষেপ নিতে গিয়ে এর পরিণাম সম্পর্কে ভাবা হয়েছে খুব কমই-

আসলে জীবিকা যখন অনিশ্চিত হয়ে পড়ে তখন জীবনও বিপন্ন হয়।


লকডাউনে রাস্তার মোড়ে মোড়ে অভাবী মানুষের ভীড় (ছবিসূত্র- বিবিসি বাংলা)

লন্ডনের ইম্পিরিয়াল কলেজের ড. ক্যারল প্রপার তার এক গবেষণায় দেখান, বেকারত্বের হার যখন শতকরা ১ ভাগ বাড়ে তখন সেই জনগোষ্ঠীর ক্রনিক রোগে ভোগার হার বাড়ে শতকরা ২ ভাগ। মানে দারিদ্র্যের সাথে পাল্লা দিয়ে বাড়ে রোগভোগও।

এমনকি অর্থনৈতিক মন্দার মধ্যে জন্ম নেওয়া শিশুদের আয়ুষ্কালও কম হয়।

২৫ মার্চ, অর্থাৎ বৃটেন যেদিন লকডাউন ঘোষণা করে তার আগের দিন ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতিবিদ ফিলিপ থমাস বলেছিলেন,

এই মহামারি যদি আগামী ৫ বছর চলে এবং কার্যকর ভ্যাকসিন আবিষ্কার না হয় তাহলে যুক্তরাজ্য জুড়ে মারা যাবে দেড় লক্ষ মানুষ।

কিন্তু যদি লকডাউন চলতে থাকে তাহলে মারা যাবে ৬ লক্ষ ৭৫ হাজার মানুষ। যা কোভিডে মৃত্যুর চেয়েও সাড়ে ৪ গুণ বেশি!

আসলে যখন শুধু একটি রোগ নিয়ে সবাই ব্যস্ত থাকে তখন মৃত্যুর আরো বহু কারণ থেকে মনোযোগ সরে যায়।

কোভিড-১৯-এ যখন বিশ্বে প্রতিদিন দু’হাজারেরও কম মৃত্যু নিয়ে হৈ চৈ হয়েছে, সেসময় এর চেয়ে অনেক বেশি মানুষ মারা গেছে ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতে না পেরে, কিডনি ডায়ালিসিসের অভাবে বা জরুরি অপারেশন করাতে না পেরে।

করোনাভাইরাসের পরোক্ষ প্রভাবে আগামীতে বিশ্বে ১০ লক্ষ শিশু এবং ৫৬৭০০ মা মারা যেতে পারে।

শিশুরা ডায়রিয়া বা নিউমোনিয়ায়, মায়েরা সন্তান জন্ম দিতে গিয়ে।

আর লকডাউনের ফলে অর্থনীতি যেভাবে থমকে গিয়েছিল তার কারণে আগামী মাসগুলোতে বিশ্বে শুধুমাত্র অনাহারেই প্রতিদিন মারা যাবে তিন লক্ষ মানুষ! বলেছে ‘ওয়ার্ল্ড ফুড প্রোগ্রাম’।

সুইডেন কেন লক ডাউন করে নি?

লকডাউন যদি বিশ্বব্যাপী কোনো এক্সপেরিমেন্টের নাম হয় তাহলে সুইডেন ছিল তার ‘কন্ট্রোল গ্রুপ’।

ইউরোপে করোনাভাইরাস জেঁকে বসার আগে বা পরে কোনো সময়ই দেশটি কোনো লকডাউন দেয় নি।

সবকিছু বন্ধ না করে শুধুমাত্র ঝুঁকিপূর্ণ জায়গাগুলোর জন্যে বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়। যেমন,

-রেস্তোরাঁ বারে ভীড় হতে পারবে না, টেবিল বসাতে হবে দূরে দূরে, প্রয়োজনে শুধু টেক অ্যাওয়ে সার্ভিসে চালাতে হবে।

-বয়স্করা যেন জরুরি প্রয়োজন ছাড়া বাড়ি থেকে বের না হন

-ওল্ড হোমে দর্শনার্থী নিষিদ্ধ এবং বয়স্কদের সংস্পর্শে যাওয়ার সময় তরুণদের সতর্ক থাকতে বলা হলো।

-কেউ অসুস্থ বোধ করলে তিনি যেন কাজে না যান। সেসময় তাকে সবেতন ছুটি দিতে বলা হলো কর্তৃপক্ষকে।

এর বাইরে সুইডেনে অফিস-আদালত, স্কুল-পার্লার সবই ছিল খোলা। এমনকি ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্যে স্কুল ছিল বাধ্যতামূলক।


প্রয়োজনীয় সতর্কতা মেনে সবকিছুই সচল ছিল সুইডেনে (ছবিসূত্র- কোয়ার্টজ)

ফলে কঠোর লকডাউন করে ইউরোপের অন্যান্য দেশ যে ফল পেয়েছে, লকডাউন না করেও সুইডেন তা-ই পেয়েছে।

উপরন্তু অর্থনীতি সচল ছিল বলে তার আর্থিক ক্ষতি সেভাবে হয় নি।

সেই সাথে হার্ড ইমিউনিটি বা গোষ্ঠী প্রতিরক্ষার ক্ষেত্রেও তারা এগিয়ে গেছে সবার চেয়ে।

এসব কারণেই গত শতাব্দীর খ্যাতনামা মহামারিবিদ ডোনাল্ড এ হিন্ডারসন যাকে পৃথিবী থেকে ‘গুটি বসন্ত নির্মূলের নায়ক’ উপাধি দেয়া হয় বলেন-

অভিজ্ঞতা বলে- মহামারিকালে মানুষের জীবনযাত্রাকে যত স্বাভাবিক রাখা হবে, মহামারিকে মানুষ তত সুন্দরভাবে এবং উদ্বেগহীনভাবে মোকাবেলা করতে পারবে।

যুক্তরাষ্ট্রে ১৭ হাজার আর বাংলাদেশে ১৭০০!

আসলে এমন একটি রোগ যাতে ৭৫ ঊর্দ্ধদের ঝুঁকি অনুর্ধ্ব ১৫-দের তুলনায় ১০০০০ গুণ বেশি, তার জন্যে পুরো রাষ্ট্রকে রূদ্ধ করে দেয়ার পদক্ষেপ কতটা বাস্তবসম্মত ছিল সেটাই এখন বলছেন বিশেষজ্ঞরা-

করোনাভাইরাসের গতিপ্রকৃতি আসলে একেক দেশে একেক রকম হয়েছে। জনগোষ্ঠীর বয়স-ইমিউনিটি, ভাইরাসের দুর্বল মিউটেশন, আবহাওয়া ইত্যাদি প্রভাবে।

যেমন, যুক্তরাষ্ট্রে প্রতি ১০ লক্ষে যেখানে ১৭ হাজার আক্রান্ত হয়েছে, বাংলাদেশে হয়েছে মাত্র ১৭০০।

হয়তো বলা হবে- বাংলাদেশে অনেক টেস্ট হয় নি, এজন্যে আক্রান্ত কম।

কিন্তু যদি মৃত্যুর হিসেব ধরি- আমেরিকায় প্রতি ৩৫৮ জনে একজন মারা গেছে। সেখানে বাংলাদেশে ২৫ হাজারে মাত্র একজন, তাও বেশিরভাগই আগে থেকে অন্যান্য জটিল রোগে ভোগা বয়স্ক মানুষ।

বাংলাদেশে মারাত্মক সংক্রমণের হারও ইউরোপ আমেরিকার তুলনায় অনেক কম (১.৪% vs ০.২৬%)!

তাছাড়া যে ধরনের লকডাউন নিউজিল্যান্ডের মতো জনবিরল ধনী দেশে করা গেছে, বাংলাদেশের মতো ১৭ কোটি মানুষের মধ্যম আয়ের দেশেও সেটা করা যাবে- এ চিন্তা কতটুকু বাস্তবসম্মত?


নিউজিল্যান্ডের মত জনবিরল দেশে লকডাউন যতটা বাস্তবায়নযোগ্য তেমনটা নয় বাংলাদেশের মত জনবহুল দেশে (ছবিসূত্র- ডেক্কানহেরাল্ড)

তাছাড়া নিউজিল্যান্ড যেভাবে লকডাউন করছে, বিশেষজ্ঞকরা বলছেন, এ ধরনের লকডাউন বেশিদিন চালিয়ে যাওয়া সম্ভব নয়।

ভাইরাসের বিস্তার ঘটবেই। যেমন ঘটেছে প্রথমদিকে সফল হওয়া সিঙ্গাপুর বা দক্ষিণ কোরিয়ায়।

লক ডাউন খোদ ইমিউনিটির জন্যেও ক্ষতিকর

তাছাড়া লকডাউন খোদ ইমিউনিটির জন্যেও ক্ষতিকর!

আমরা জানি, সূর্যের আলোতে যে ভিটামিন-ডি পাওয়া যায় তা দাঁত এবং হাড়ের জন্যে ভালো। কিন্তু ভিটামিন-ডি যে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বাড়ায় তা কি আমরা জানি?

পাশ্চাত্যে করোনায় যে এত মৃত্যু হয়েছে তার একটা বড় কারণ- শীতপ্রধান হওয়ার কারণে সেসব দেশের মানুষ সূর্যের আলো পায় কম, ফলে তাদের দেহে ভিটামিন ডি-র ঘাটতি থাকে। যার পরিণতি দুর্বল রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা।


ঘরে থাকুন নিরাপদ থাকুন- করোনায় বহুল চর্চিত এই প্রবচন শেষমেশ যেন প্রহসন হয়ে দাঁড়িয়েছে! (ছবিসূত্র- দ্য গার্ডিয়ান)

বিশেষজ্ঞরা বলেন, লকডাউনের মাধ্যমে একটা পুরো জনগোষ্ঠীকে ভাইরাসের সংস্পর্শ থেকে দূরে রাখার চেষ্টা সামষ্টিক জনস্বাস্থ্যের জন্যে সবসময়ই ঝুঁকিপূর্ণ।

এর ফলে নতুন ভাইরাসের বিরুদ্ধে তাদের কখনো প্রতিরোধ ক্ষমতা জন্মাবে না।

১০০ বছর আগে স্প্যানিশ ফ্লুর কয়েক দফা আক্রমণে বিশ্বের ৫ কোটি মানুষকে আমরা এভাবেই হারিয়েছি।

শুধু তাই না, লকডাউনের ফলে যে যোগাযোগ বিচ্ছিন্নতা সৃষ্টি হয়, যে নিঃসঙ্গতা এবং একাকিত্বে মানুষ আক্রান্ত হয় তা এতই ক্ষতিকারক যে বলা হয়, ১৫টি সিগারেট খেলে ইমিউনিটির যে ক্ষতি হবে, সেই একই ক্ষতি হয় নিঃসঙ্গ অনুভব করলে।

নিঃসঙ্গ মানুষদের অল্প বয়সে মারা যাওয়ার সম্ভাবনা ৫০ ভাগ বেশি।

তাই মহামারি প্রতিরোধে লকডাউন কোনো কার্যকর পদ্ধতি নয়।

ভবিষ্যতে আবার কোনো মহামারি এলে এ শিক্ষাটাই আমাদের মনে রাখতে হবে-

Lockdown was a panic measure and I believe history will say trying to control Covid-19 through lockdown was a monumental mistake on a global scale, the cure was worse than the disease.

I never want to see national lockdown again.

We absolutely should never return to a position where children cannot play or go to school.

Mark Woolhouse, Medical Advisor to Boris Johnson, PM of Britain