ধূমপান নিয়ে বহুল প্রচলিত জোকসটা বোধহয় আমরা অনেকেই জানি- একটি সিগারেটের একপ্রান্তে থাকে আগুন আর অন্যপ্রান্তে থাকে একজন আহাম্মক!
না, এ নিবন্ধের উদ্দেশ্য ধূমপায়ীদের হেয় করা নয়, বরং সবাইকে সচেতন করে তোলা। তাদের নিজের ও পরিবারের স্বার্থে, বৃহত্তর স্বার্থে তো বটেই। কারণ বিশ্বজুড়ে প্রতিদিন ঘটে চলেছে অসংখ্য অকালমৃত্যু। এর মধ্যে এমন কারণও আছে যা এড়ানো অসম্ভব কিছু নয়, প্রয়োজন শুধু সচেতন প্রচেষ্টা। প্রতিরোধযোগ্য এসব মৃত্যুর প্রধান কারণ কিন্তু যক্ষ্মা, ম্যালেরিয়া, এইডস কিংবা ক্যান্সার নয়। বরং এ রোগগুলোতে যত মানুষের প্রাণহানি ঘটছে তারচেয়ে ঢের বেশি অকালমৃত্যুর কারণ হলো নীরব মহামারী ধূমপান। বিশ্বজুড়ে দিন দিন অকালমৃত্যুর প্রধানতম কারণ হয়ে উঠছে এই ধূমপান।
একটি অনুসন্ধান মতে, বাংলাদেশে মোট জিডিপির এক শতাংশ খরচ হয় ধূমপানের পেছনে। বর্তমানে বিশ্বে প্রতিবছর ২০ লাখের অধিক লোক মারা যায় ধূমপানজনিত ক্যান্সারে। এর মধ্যে বাংলাদেশে মারা যায় বছরে ৫৭ হাজার। এক গবেষণায় জানা যায়, ধূমপান বন্ধ হলে বছরে নয় হাজার কোটি টাকা লোকসানের হাত থেকে রক্ষা পাবে বাংলাদেশ। অন্যদিকে ভবিষ্যৎ প্রজন্ম রেহাই পাবে ধূমপানজনিত ক্যান্সারের হাত থেকে। উল্লেখ্য, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে যে পরিমাণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে, তার ১২ গুণ বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে ধূমপানের কারণে।
ধূমপান শুধু যে ধূমপায়ীর একার জন্যেই ক্ষতিকর তা নয়; বরং প্রত্যক্ষ ধূমপানের চেয়ে পরোক্ষ ধূমপান অনেক বেশি মাত্রায় ক্ষতিকর। আর সে ক্ষতি যে কত বহুমাত্রিক এবং প্রাণঘাতী হতে পারে তা এখন সচেতন মানুষ মাত্রই জানেন। মানবদেহের প্রায় প্রতিটি সিস্টেমের ওপরই রয়েছে ধূমপানের স্বাস্থ্যঘাতী প্রভাব। ফুসফুস-সহ গোটা শ্বসনতন্ত্রের ওপর ধূমপানের ক্ষতিকর প্রভাব সম্বন্ধে প্রায় সবাই এখন জানেন।
কিন্তু ধূমপানের ক্ষতি শুধু এটুকুতেই সীমাবদ্ধ নয়। বিশেষত হৃদযন্ত্রের ওপর এর ক্ষতির পরিমাণ সীমাহীন। কারণ সিগারেটে থাকা নিকোটিন হৃৎপিণ্ডের করোনারি ধমনীকে ক্রমাগত সংকুচিত করে তোলে এবং বলা হয়ে থাকে যে, যাদের করোনারি হৃদরোগ রয়েছে তাদের আকস্মিক হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর জন্যে কখনো কখনো একটি সিগারেটই যথেষ্ট। আর ধূমপায়ীদের হার্ট অ্যাটাকে মৃত্যুর আশঙ্কা অধূমপায়ীদের চেয়ে এমনিতেই ছয় গুণ বেশি।
ধূমপায়ীরা কি জানেন, সিগারেট ফুঁকে লম্বা সুখটানে তারা কী টেনে নিচ্ছেন? উত্তর হলো, প্রায় চার হাজার রকমের রাসায়নিক উপাদান। গবেষণায় দেখা গেছে যে, এর সবই স্বল্প এবং দীর্ঘমেয়াদে মানবদেহের জন্যে বিষাক্ত। তাই ‘সুখটানে বিষপান’ কথাটি সত্য বটে।
এ-ছাড়াও ধূমপানের ফলে শরীরের জন্যে উপকারী এইচডিএল কোলেস্টেরলের মাত্রা কমতে থাকে। ধূমপায়ীরা এভাবে শুধু নিজের ক্ষতিই করছেন না, বরং পরোক্ষভাবে স্ত্রী-সন্তানসহ পরিবারের সদস্য এবং পরিবেশের ক্ষতিও করে যাচ্ছেন প্রতিনিয়ত।
ধূমপানের স্বাস্থ্যঘাতী দিকগুলো সম্বন্ধে এখন আধুনিক মানুষ মাত্রই সচেতন। কিন্তু এখানেই শেষ নয়, আমাদের চারপাশের মানুষের- বিশেষত ভবিষ্যৎ প্রজন্মের স্বার্থে এ নিয়ে সচেতনতার প্রয়োজন আছে আরো। নিজেদের সন্তানদের সুস্থতার জন্যে ধূমপায়ীদের জানতে হবে বিজ্ঞানীদের সাম্প্রতিক গবেষণালব্ধ সাবধানবাণী; তা হলো-ধূমপান শুধু ধূমপায়ীরই ক্ষতি করে না, বরং পরোক্ষভাবে অধূমপায়ীদের জীবনকেও দীর্ঘমেয়াদে করে তোলে ঝুঁকিপূর্ণ। বিশ্বজুড়ে ফুসফুসের ক্যান্সারের অন্যতম কারণ হলো পরোক্ষ ধূমপান। ধূমপায়ীদের অজ্ঞতার ফলে এভাবেই তার চারপাশের মানুষের জীবনও হয়ে ওঠে ক্ষতিগ্রস্ত ও বিপন্ন। এ প্রসঙ্গে বিশেষজ্ঞদের সাম্প্রতিক গবেষণার ফলাফল বলছে, ধূমপায়ী মা-বাবার সন্তানেরা উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হয়।
টাইম সাময়িকীর একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, যেসব শিশু স্কুলে যাওয়ার বয়স হওয়ার আগেই বাবা-মায়ের পরোক্ষ ধূমপানের শিকার হয়, তাদের উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি অধূমপায়ী বাবা-মায়ের সন্তানদের তুলনায় শতকরা ২১ ভাগ বেশি।
তারা বলেন, এটি আসলেই মারাত্মক। কারণ এসব শিশু সারাজীবন ধরে উচ্চ রক্তচাপে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকি বয়ে বেড়ায়। সেইসাথে থাকে স্ট্রোক ও হৃদরোগের মতো প্রাণঘাতী রোগের শঙ্কা। আর শৈশব থেকেই যারা এমন বাড়তি রক্তচাপে ভোগে, পরবর্তীতে তাদের হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি এমনিতেই অনেক বেশি। শুধু এমন পরোক্ষ ধূমপানের কারণেই যুক্তরাষ্ট্রে বর্তমানে হৃদরোগীর সংখ্যা প্রায় ২৭ মিলিয়ন। তাই ধূমপানের প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষ ক্ষতি সম্বন্ধে আমাদের সচেতন হতে হবে এখনই।
ধূমপানে বার্ধক্য আসে দ্রুত। ২০১৩ সালে রয়টার্সের একটি রিপোর্টে বলা হয়, একজন ধূমপায়ী ও আরেকজন অধূমপায়ী, এমন ৭৯ জোড়া যমজের ওপর যুক্তরাষ্ট্রে একটি গবেষণা পরিচালিত হয়। চূড়ান্ত ফলাফল বিশ্লেষণ করে সে-দেশের ত্বক-চিকিৎসক ও কসমেটিক লেজার বিশেষজ্ঞ এলিজাবেথ তানজি বলেন, এসব জোড়ায় পরস্পরের মধ্যে জিনগত বৈশিষ্ট্যগুলো প্রায় একইরকম হলেও ধূমপায়ীদের দেখাচ্ছিল অপেক্ষাকৃত বার্ধক্যপীড়িত এবং ওদের চেহারায়ও বার্ধক্যের ছাপ ছিল স্পষ্ট।
তামাক তথা ধূমপানের এ সমস্ত ক্ষতি বিবেচনায় বিশ্বজুড়ে এখন এর সমাধানের উপায় খোঁজা হচ্ছে। পৃথিবীর প্রায় সবকটি দেশেই এখন এ নিয়ে ভাবনা-চিন্তার অন্ত নেই।
২০০৮ সালে নিউইয়র্ক সিটির তৎকালীন মেয়র মাইকেল ব্লুমবার্গের একটি নিবন্ধ প্রকাশিত হয় নিউজউইক সাময়িকীর প্রিন্ট সংস্করণে। দ্য ওয়ে টু সেভ মিলিয়নস অব লাইভস ইজ টু প্রিভেন্ট স্মোকিং শীর্ষক এ নিবন্ধটিতে তিনি আশঙ্কা প্রকাশ করেন- ‘খোদ আমেরিকাতেই প্রতিদিন গড়ে ১৪০০ মানুষ প্রাণ হারাচ্ছে শুধু ধূমপানের কারণে। আমরা যদি এখনই কোনো পদক্ষেপ না নিই, তাহলে এ শতাব্দীর শেষ প্রান্তে গিয়ে এ সংখ্যা দাঁড়াবে এক বিলিয়নে।’
তিনি আরো বলেন, ‘২০০২ সালে আমি কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধকরণ আইনে স্বাক্ষর করি। ব্যাপক হইচই সত্ত্বেও সাধারণ মানুষ কিন্তু এজন্যে আমাকে আন্তরিক ধন্যবাদ জানায়। কারণ এর ফলে সবখানে কাজের চমৎকার পরিবেশ গড়ে উঠেছে এবং রেস্টুরেন্টগুলোতেও ব্যবসা বেড়ে যায় বলে তারা আমাকে জানান। এর কিছুদিনের মধ্যেই ইংল্যান্ড, ফ্রান্স, ইটালি, আয়ারল্যান্ডেও এ আইনের প্রয়োগ শুরু হয়।
পাশাপাশি সিগারেটের ওপর ট্যাক্স বাড়ানো হয় এবং ধূমপান বিরোধী প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে উদ্বুদ্ধ করা হয়। ফলে দেখা গেছে, ওখানে ধূমপানের হার কমে গেছে শতকরা ২১ ভাগ। আর কিশোর ধূমপায়ীর সংখ্যা নেমে এসেছে অর্ধেকে। অথচ ছয় বছর আগে ২০০২ সালে নিউইয়র্কে ধূমপায়ীর সংখ্যা ছিল তিন লক্ষ।’
নিউইয়র্ক ও অন্যান্য উন্নত দেশগুলোতে যখন ধূমপায়ীর সংখ্যা কমানোর এই নিরন্তর চেষ্টা অব্যাহত, তখন উন্নয়নশীল দেশগুলোতে ক্রমশ ধূমপানের কারণে বেড়ে চলেছে মানবসম্পদ ও সম্ভাবনার নির্মম অপচয়। বলা হচ্ছে, আগামী কয়েক দশকে ধূমপানজনিত কারণে মৃত্যুর ৮০ শতাংশই ঘটবে উন্নয়নশীল দেশগুলোতে।
স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, অন্যান্য রোগের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ ও সচেতনতা সৃষ্টিতে যে পরিমাণ অর্থ বরাদ্দ হয়, সে তুলনায় এ-ক্ষেত্রে অর্থ বরাদ্দের পরিমাণ নেই বললেই চলে।
ধূমপানের কারণে ধেয়ে আসা নিশ্চিত বিপর্যয় এড়াতে বিল এন্ড মেলিন্ডা গেটস ফাউন্ডেশন ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সাথে একযোগে কাজ শুরু করেন মেয়র ব্লুমবার্গ। যার প্রেক্ষিতে ছয়টি কর্মকৌশল নির্ধারণও করেন তারা।
প্রথমত, তামাকের বিস্তার ও এর বহুবিধ ব্যবহারের ক্ষেত্রগুলো পর্যবেক্ষণ করা। কারণ সমাধানের পথ খুঁজে পেতে হলে আগে সমস্যার গুরুত্ব বুঝতে হবে আপনাকে।
দ্বিতীয়ত, পরোক্ষ ধূমপান থেকে মানুষকে রক্ষা করা এবং এর একমাত্র উপায় হলো কর্মক্ষেত্রে ধূমপান নিষিদ্ধকরণের মাধ্যমে তামাকমুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি করা, যা ইতোমধ্যে নিউইয়র্কে বেশ জনপ্রিয়তা পেয়েছে।
তৃতীয়ত, ধূমপান থেকে বেরিয়ে আসতে কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে মানুষকে সাহায্য করা।
চতুর্থত, জোরালো প্রচারণার মাধ্যমে মানুষকে ধূমপানের কুফল সম্বন্ধে সচেতন করে তোলা।
পঞ্চমত, তামাকের সমস্ত বিজ্ঞাপন, প্রচারণা ও স্পন্সরশিপ নিষিদ্ধ করা। এ থেকে সাশ্রয় হতে পারে বিপুল অর্থ, যা তামাক শিল্পগুলো সিগারেটের বিজ্ঞাপনে খরচ করে।
ষষ্ঠত, তামাকের কর বাড়ানো। বিশেষত তরুণদের মাঝে ধূমপান নিয়ন্ত্রণ ও বন্ধে এ পদ্ধতি সবচেয়ে কার্যকর। ধূমপান নিরুৎসাহিতকরণের পাশাপাশি এটি রাজস্বখাতেও প্রচুর অর্থের যোগান দেবে, যা ধূমপান বিরোধী প্রচারণায় কাজে লাগানো সম্ভব।
অনেক দেশই এই কর্মকৌশলগুলো বাস্তবায়নের জন্যে ধাপে ধাপে প্রস্তুতি নিচ্ছে। ইতোমধ্যে মেক্সিকো, তুরস্ক ও চীন সরকার এর প্রয়োগ শুরু করেছে। সম্প্রতি অস্ট্রেলিয়া সরকারও ধূমপানের ফলে ক্রমশ ধেয়ে আসা মহামারি ঠেকাতে তৎপর হয়ে উঠেছে।
সংশয়বাদীদের ধারণা-ধূমপান আমাদের জীবনযাপনের সংস্কৃতির এত গভীরে ঢুকে গেছে যে, এর মূলোৎপাটন সহজ নয়। কিন্তু এ-ও সত্য-মানুষ যখন যা চেয়েছে তা-ই সম্ভব হয়েছে। এ-ক্ষেত্রে আঞ্চলিক সংস্থাগুলো ও সরকারসহ আমরা সবাই সঙ্ঘবদ্ধভাবে কাজ শুরু করলে ধূমপানজনিত অসংখ্য অকালমৃত্যুর হার রোধ করা সম্ভব। আর ধূমপানের বিরুদ্ধে শক্ত প্রতিরোধ গড়ে তোলাটাই এখন বিশ্বজুড়ে অকালমৃত্যু ঠেকানোর অন্যতম উপায়। তাতে বেঁচে যাবে লক্ষ কোটি সম্ভাবনাময় প্রাণ।
এ-তো গেল আঞ্চলিক বা বৈশ্বিক পর্যায়ের কথা। ব্যক্তিপর্যায়ে আপনি কী করতে পারেন? আপনার ব্যক্তিগত সচেতনতা সামান্য হলেও ভূমিকা রাখতে পারে বিশ্বের পট পরিবর্তনে। আপনি যদি ধূমপায়ী হয়ে থাকেন তবে ধূমপান ত্যাগের মধ্য দিয়ে শুরু হতে পারে এ পরিবর্তনের সূচনা।
অনেকে বলেন, ‘ধূমপান ছেড়ে দেয়া খুব সহজ। কতবার ছাড়লাম! কিন্তু দিন কয়েক যেতে না যেতেই আবার ধরে ফেলি-সমস্যাটা সেখানেই!’ বাস্তবতা হলো-আপনি চাইলে জীবনের তরে ধূমপান ছেড়ে দিতে পারেন। শুধু আপনার ইচ্ছাশক্তিই এজন্যে যথেষ্ট।
ইচ্ছাশক্তিকে কাজে লাগানোর জন্যে কিছু কৌশল অবলম্বন করতে পারেন আপনি। যেমন : আজকের পর থেকে ধূমপানকে একটি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ কাজ বলে মনে করুন। তাই যখনই ধূমপান করতে ইচ্ছে হবে তখন সব কাজ বাদ দিয়ে আপনি ধূমপানের জন্যেই সময় বরাদ্দ করুন। সচেতন হোন কখন আপনি ধূমপান করেন। গল্প করতে করতে বা টিভি দেখতে দেখতে, হাঁটতে হাঁটতে কিংবা কোনো কাজ করতে করতে ধূমপান করবেন না।
ধূমপানের সময় পুরোটা মনোযোগ নিবদ্ধ করুন আপনার কাজটিতে। চোখ বন্ধ করে সুখটান দিন, কল্পনার চোখে দেখুন, সিগারেটের ধোঁয়া আপনার নাক দিয়ে শ্বাসনালী অতিক্রম করে ফুসফুসের ভেতরে প্রবেশ করছে। এবার অনুভব করুন-ধোঁয়াটা ক্রমশ একটি সাপের আকার নিচ্ছে এবং এ সাপটি ফুসফুসে গিয়ে ছোবল মারছে আর প্রতিটি ছোবলের সাথে ঢেলে দিচ্ছে নিকোটিন নামের বিষ।
অনুভব করতে চেষ্টা করুন-বিষাক্ত ছোবলে আপনার ফুসফুস যন্ত্রণায় কাতরাচ্ছে। অনুভূতি না এলে বাস্তবে যন্ত্রণার অভিনয় করুন। পরের টান দিয়ে আবার একই অনুভূতি আনার চেষ্টা করুন। পুরো একটা সিগারেট শেষ করে আপনি আপনার অনুভূতি ডায়েরিতে লিখে রাখুন। এভাবে একদিন, দুই দিন, তিন দিন, বড়জোর এক সপ্তাহ; একসময় দেখবেন আপনার শরীর সিগারেট প্রত্যাখ্যান করবে। ধূমপান বর্জনের এটি অত্যন্ত পরীক্ষিত ও ফলপ্রসূ প্রক্রিয়া। গত দু-যুগে বহু মানুষ এ প্রক্রিয়া অনুসরণ করে ধূমপানের মতো আত্মঘাতী অভ্যাস থেকে মুক্ত হয়েছেন।
এ-ছাড়াও মেডিটেশনের মাধ্যমে সিগারেট ছাড়তে পারেন আপনি। নিয়মিত মেডিটেশন বা ধ্যান করলে মনের ওপর আপনার নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠা সহজ হবে, জাগ্রত হবে আপনার ইতিবাচক শক্তি। তখন যে-কোনো কাজ অনুসরণ বা বর্জন আপনার জন্যে হয়ে উঠবে অনেক সহজ।
সর্বগ্রাসী ধূমপান আসক্তি থেকে চিরতরে মুক্ত হওয়ার সংকল্পে আপনি এখন বদ্ধপরিকর। আপনি পারবেনই। আপনাকে আমাদের আগাম অভিনন্দন!