উত্তর লেখার ক্ষেত্রে

published : ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১১

  • হলে নিজের আসনে পরীক্ষা শুরুর অন্তত ১৫ মিনিট আগে বসুন। ৫ মিনিট মেডিটেশন করুন। অটোসাজেশন দিন- যা পড়েছি সব মনে আছে। লেখার সময় সুন্দরভাবে তা মনে চলে আসবে।
  • প্রশ্নপত্রের উভয়পিঠ ভালোভাবে পড়ুন। নির্দেশনাগুলো খেয়াল করুন।
  • প্রতিটি প্রশ্নের জন্যে সময় ভাগ করে ফেলুন। বরাদ্দকৃত সময়ে শেষ না হলে ফাঁকা রেখে পরের প্রশ্নে চলে যান।
  • জটিল প্রশ্নের উত্তর নয়; শুরু করুন সহজ এবং ভালোভাবে জানা উত্তরটি দিয়ে।
  • কোনো প্রশ্ন ছেড়ে আসবেন না। কারণ দুটো অর্ধেক উত্তর একটা সম্পূর্ণ উত্তরের চেয়ে বেশি নম্বর তুলবে।
  • বাধ্যতামূলক না হলে জটিল বা সঠিক উত্তর জানা নেই এমন প্রশ্ন এড়িয়ে চলুন।
  • প্রশ্নের উত্তর তিন ভাগে ভাগ করুন- ভূমিকা, মূল বক্তব্য ও উপসংহার। ভূমিকা ও উপসংহার যত্ন করে লিখুন।
  • উত্তরে বৈচিত্র্য আনতে ডায়াগ্রাম, ছক, চিত্র ব্যবহার করুন। লেখক/বইয়ের কিছু শব্দ/বাক্য উদ্ধৃত করুন।
  • রচনামূলক পরীক্ষার ক্ষেত্রে কোন প্রশ্নের উত্তরে কী জানতে চাওয়া হয়েছে তা বুঝে লিখুন। যেমন, তুলনা কর, পার্থক্য কর, সংজ্ঞা দাও, বর্ণনা কর, মন্তব্য কর, মূল্যায়ন কর, তালিকা কর, ব্যাখ্যা কর বা সম্পর্কিত কর ইত্যাদি প্রতিটি প্রশ্নেরই উত্তর লেখার ধরন হবে আলাদা আলাদা। কোন অংশের জন্যে কত নম্বর তা-ও দেখুন।
  • কোনো প্রশ্নের উত্তর বা পয়েন্ট মনে করতে না পারলে ফাঁকা জায়গা রেখে পরবর্তী প্রশ্ন বা পয়েন্ট লিখতে থাকুন।
  • খাতা জমা দেয়ার সময় নাম, রোল, রেজি. নম্বর ঠিক আছে কি না তা নিশ্চিত হোন। অতিরিক্ত কাগজ নিলে স্টেপলিং বা সুতোর গিঁঠ ঠিকভাবে দিন।
  • একজন পরীক্ষক প্রতিটি খাতা দেখার জন্যে যে সময় পান তা খুবই কম। আর কথায় বলে আগে দর্শনধারী তারপর গুণবিচারি। তাই খাতায় কী লেখা হচ্ছে তা যেমন গুরুত্বপূর্ণ, তার চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো তার উপস্থাপন। পরীক্ষার খাতায় হাতের লেখা হওয়া উচিত সুন্দর ও স্পষ্ট, উপস্থাপনটা হওয়া উচিত ব্যতিক্রমী ও নজরকাড়া এবং বানানসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে সঠিকভাবে তাই করা যা আপনি নিজে পরীক্ষক হলে পছন্দ করতেন।
  • শেষ ৫/১০ মিনিট খাতা রিভাইজ করুন।

 নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষার ক্ষেত্রে

  • নির্দেশনাগুলো পড়ুন। দেখুন ভুল উত্তরের জন্যে কোনো নম্বর কাটা যাবে কি না।
  • সবগুলো অপশন পড়ুন। যেমন, মাইকেল এঞ্জেলো একজন ১. প্রখ্যাত ভাস্কর ও স্থাপত্যশিল্পী ২. প্রখ্যাত চিত্রকর ও স্থাপত্যশিল্পী ৩. প্রখ্যাত কন্ঠশিল্পী ও চিত্রকর ৪. প্রখ্যাত চিত্রকর, ভাস্কর ও স্থাপত্যশিল্পী
  • প্রশ্নের গুরুত্বপূর্ণ অংশটিতে আন্ডারলাইন করুন বা গোলদাগ দিন। যেমন, কবর নাটকের প্রেক্ষাপট হিসেবে কোন্‌ যুক্তিটি সমর্থনযোগ্য? ১. শিক্ষা আন্দোলন ২. ভাষা আন্দোলন ৩. গণ আন্দোলন ৪. ভাষা আন্দোলন
  • সরাসরি সঠিক উত্তরটি বুঝতে না পারলে বাদ দেয়ার প্রক্রিয়ায় এগোন। যে অপশনগুলো ভুল বলে আপনি নিশ্চিত সেগুলোকে ক্রসচিহ্ন দিয়ে দিন। এবার বাকিগুলোর মধ্য থেকে বেছে নিন। যেমন, ধূমপান ত্যাগের জন্যে যথেষ্ট কোনটি? ১. ধূমপায়ীকে শাস্তি ২. ধূমপায়ীকে বয়কট ৩. ধূমপায়ীর ইচ্ছাশক্তি ৪. ধূমপায়ীকে বন্দি করা
  • অনেক সময় প্রশ্নের মধ্যেই সঠিক উত্তরের ইঙ্গিত থাকে। যেমন, আত্মিক মৃত্যু মানে কী? ১. শিক্ষাদীক্ষায় দূরে থাকা ২. লোভাতুর প্রকৃতির উন্মেষ ৩. সমাজ থেকে বিচ্ছিন্ন থাকা ৪. জাগতিক মৃত্যু
  • ‘ওপরের সবকটি’ বেছে নেবার আগে নিশ্চিত হয়ে নিন যে সবগুলোই ঠিক। যেমন, পাইকারি ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান কোন ধরনের ব্যবসায় প্রতিষ্ঠান হতে পারে? ১. একমালিকানা সংগঠন ২. অংশীদারী সংগঠন ৩. যৌথ মূলধনী কোম্পানি সংগঠন ৪. ওপরের সবকটি।
  • ‘কোনোটিই নয়’ এ জাতীয় উত্তর থাকলে নিশ্চিত হয়ে নিন কোনটি বেছে নেবেন? যেমন, কোন হিসাব ব্যবসায়ীদের জন্যে উপযোগী? ১. চলতি হিসাব ২. সঞ্চয়ী হিসাব ৩. স্থায়ী হিসাব ৪. কোনোটিই নয়   

 যা করবেন না (পরীক্ষার সময়)

  • আমি কিছু পড়ি নি/ সব ভুলে গেছি/ এবার ফেল করবো/ অমুক প্রশ্নে ভুল করেছি- এ জাতীয় কথা বলা।
  • পরীক্ষার আগে এমন সহপাঠীদের সাথে কথা বলা, যাদের প্রস্তুতি খারাপ বা যারা আতংকিত। কারণ আতংক সংক্রামক।
  • উত্তর মেলানো, দেখাদেখি করা, খাতা দেখানোর জন্যে জোরাজুরি বা হুমকি দেয়া।
  • বেশি নম্বর পাওয়ার আশায় জটিল প্রশ্নের উত্তর করা।
  • নির্ধারিত সময়ের মধ্যে খাতা জমা না দেয়া।
  • ব্যবহারিক পরীক্ষার জন্যে প্রস্তুতি নেয়ার দরকার নেই মনে করা।
  • খারাপ হাতের লেখা। কারণ উত্তর ভালো হলেও এতে আশানুরূপ নম্বর পাওয়া যাবে না।

 পরীক্ষার পর

  • ফলাফল খারাপ হওয়ার দায়ভার নিজে নিন। ভুলগুলো খুঁজে দেখুন, পুনরাবৃত্তি থেকে বিরত থাকুন।
  • কাঙ্ক্ষিত ফলাফলের জন্যে মনছবি দেখুন, প্রার্থনা ও দান করুন।
  • একটি পরীক্ষা খারাপ হলেই মুষড়ে পড়বেন না। পরের পরীক্ষাগুলো ভালোভাবে দিন।
  • বিরতির দিনগুলো সৎসঙ্ঘে কল্যাণকর ও ভালো কাজে পরিকল্পিতভাবে ব্যয় করুন।
  • ভাইভা
    • সহজ, প্রশান্ত মনে ভাইভায় অংশ নিন। শিক্ষকদের বিচারক না ভেবে সহযোগী ভাবুন। প্রশান্ত প্রত্যয়, নীরব প্রস্তুতি, বিনয় আর সাবলীল উপস্থাপনা শিক্ষকদের সপ্রশংস দৃষ্টি কেড়ে নেবে।
    • পরীক্ষার আগ মুহূর্ত পর্যন্ত হুড়মুড় করে সব রিভাইজ করতে যাবেন না।
    • প্রস্তুতির ব্যাপারে (জানতে চাইলে) বলুন, ‘শোকর আলহামদুলিল্লাহ! বেশ ভালো/ আমি চেষ্টা করছি