সুখী বিয়েই একটি সুখী পরিবারের সবচেয়ে গুরুতপূর্ণ পূর্বশর্ত। এজন্যে পাত্র এবং পাত্রী দু’পক্ষকেই জানতে হবে বিয়ের সঠিক কিছু দৃষ্টিভঙ্গি, মানতে হবে সহজ কিছু করণীয়।
১. ছোটবেলা থেকেই কন্যাসন্তানকে আত্মপরিচয় সৃষ্টিতে উদ্বুদ্ধ করুন। বিয়ের আগে লেখাপড়া শেষ করে তাকে নিজের পায়ে দাঁড়াতে দিন।
২. আপনার মেয়ে যাতে সবসময় মনে করতে পারে যে আপনি তার পাশে আছেন। বিয়ের পর মেয়ে হয়ে যায় পরের, বাবার বাড়ির সঙ্গে আর তার সম্পর্ক রাখা যাবে না-এটা ভ্রান্ত দৃষ্টিভঙ্গি। মেয়েরা শ্বশুরবাড়িতে নির্যাতনের শিকার হয় এ মানসিকতার কারণেই।
৩. মেয়ের বিয়ে হচ্ছে না বলে তাকে খোঁটা দেবেন না, কটু কথা শোনাবেন না। তার প্রতি সমমর্মিতা পোষণ করুন।
৪. বিয়েকেই তার জীবনের একমাত্র লক্ষ্য হিসেবে তুলে ধরবেন না। শুধু চেহারা বা রূপসজ্জা নয়, তাকে তার মেধা বিকাশের জন্যে উৎসাহিত করুন। তাকে বোঝান রূপের প্রশংসা সাময়িক। গুণের কদর চিরন্তন। তাই গুণকে বিকশিত করুন।
৫. বিয়ের সিদ্ধান্তে তাড়াহুড়ো করবেন না। পাত্র/পাত্রী পক্ষের লৌকিক আচরণ দেখেই মুগ্ধ হবেন না। সব ব্যাপারে খোঁজ-খবর নিয়ে তারপর সিদ্ধান্ত নিন। বিয়ে হওয়া উচিত সম-সামাজিক এবং সম-সাংস্কৃতিক পরিমণ্ডলে। আর পরিচিত গণ্ডীতে হলে তা আরো ভালো।
৬. যৌতুক দেবেন না। অর্থের বিনিময়ে কখনো সুখ কেনা যায় না। অর্থ এমন একটি দুষ্টচক্র তৈরি করে যে, যত পাওয়া যায় তত এর অভাববোধ বাড়তে থাকে।
৭. নির্যাতন, অবহেলা, বিশ্বাসভঙ্গ বা অন্য কোনো গুরুতর কারণে যদি বিয়ে টিকিয়ে রাখা অসম্ভব হয় তাহলে মেয়ের পাশে দাঁড়ান। সামাজিক নিন্দা বা পারিবারিক কলংক ইত্যাদি কারণ সামনে এনে বিয়ে টিকিয়ে রাখার জন্যে মেয়ের ওপর মানসিক চাপ সৃষ্টি করবেন না। বরং এসব ক্ষেত্রে বাচ্চা হওয়ার আগেই বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া ভালো।
৮. একটা বাচ্চা হলে আপনার সংসারে শান্তি ফিরে আসবে, স্বামী ভালো হয়ে যাবে এ আশায় তাড়াহুড়ো করে সন্তান নেয়ার সিদ্ধান্ত নেবেন না। কারণ অধিকাংশ ক্ষেত্রে দেখা গেছে সন্তান হওয়ার পর অশান্তি আরো বেড়ে গেছে এবং তখন বিচ্ছেদের সিদ্ধান্ত নেয়া আরো কঠিন হয়ে গেছে। আর তাছাড়া পারিবারিক অশান্তির মধ্য দিয়ে যে শিশু জন্মায় বা বেড়ে ওঠে তার মানসিক ভারসাম্য সবসময়ই নড়বড়ে অবস্থায় থাকে।