published : ১ মে ২০২২
বিশ্বায়নের এই যুগে দেশ-বিদেশের যেখানেই আপনি থাকুন না কেন, শিক্ষা ও পেশাগত অগ্রগতির জন্যে আপনাকে ইংরেজিতে পারদর্শী হতে হবে। তবে কেবল লেখা বা পড়া নয়, অন্য যে-কোনো ভাষার মতো ইংরেজিতেও আপনি পারদর্শী হবেন যখন পড়া, লেখা, শোনা এবং বলা- এই চারটি অনুষঙ্গে দক্ষতা অর্জন করবেন।
সহজ কিছু টিপস অনুসরণ করেই আপনি বাড়াতে পারেন ব্যবহারিক ইংরেজিতে আপনার দক্ষতা।
ইংরেজিতে বলায় দক্ষতা বাড়ানোর পথে সবচেয়ে বড় অন্তরায় আমাদের জড়তা।
বিশেষত ভারতীয় উপমহাদেশের এই আমরা ব্যাকরণ প্রয়োগ ও উচ্চারণে একটু বেশিই সচেতন থাকি। ফলে জনসমক্ষে ইংরেজিতে কথা বলতে গেলে মনে আসে নানা টেনশন- সঠিক টেনস ব্যবহার করলাম তো! উচ্চারণ ঠিকঠাক হলো তো!
নানা দ্বিধা-সংকোচ-জড়তার দোলাচলে পড়ে আমরা ইংরেজিতে দুটো শব্দ উচ্চারণ করতেও কেমন যেন কুঁকড়ে যাই!
মনে রাখুন, ইংরেজি আমাদের মাতৃভাষা নয়। তাই ইংরেজিতে সবসময় যে আমরা শতভাগ সঠিক ব্যাকরণ ও উচ্চারণে কথা বলতে পারব- এমনটা আশা করাও ঠিক নয়।
ব্যাকরণের ভিত মজবুত হলেই যে আপনি ভাষায় দক্ষ হবেন তা কিন্তু না! তা-ই যদি হতো তাহলে স্কুল-কলেজে ১২ বছর গ্রামার পড়ার পরও বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ইংরেজি শুনে বোঝা ও বলার ক্ষেত্রে দুর্বল হতো না।
অন্যদিকে, প্রবাসীদের দেখুন- হয়তো স্কুলের গণ্ডিও পেরোয় নি, তবুও ইংরেজিতে কথা বলায় কতটা সাবলীল তারা!
আসলে ভাষার মূল উদ্দেশ্য সার্থকভাবে যোগাযোগ সম্পন্ন করা। তাই যথোপযুক্ত ব্যাকরণ অনুসরণ না করেও আপনি যে-কোনো ভাষায় দক্ষ হতেই পারেন।
খুঁজে নিন আপনারই মতো কাউকে। কথোপকথন, আলাপ-আলোচনা, গল্প-স্বল্প সবই করুন ইংরজিতে।
মুখে ফুটে ইংরেজি বেরুচ্ছে না? আপাতত কিছুদিন বন্ধুদের সামনে দাঁড়িয়ে ইংরেজি বই থেকে উচ্চস্বরে রিড-আউট (দেখে দেখে পড়া) প্র্যাকটিস করুন। যত এভাবে চর্চা করবেন ততো বাড়বে স্পোকেন ইংলিশে দক্ষতা।
নিয়মিত পড়ার মাধ্যমেই সম্ভব পড়ে বোঝার ক্ষমতা বাড়ানো। তাই প্রতিদিনই ইংরেজিতে কিছু না কিছু পড়ুন।
পড়তে পারেন গল্পের বই, উপন্যাস, সায়েন্স ফিকশন, ম্যাগাজিন, সংবাদপত্র বা ই-বুক। তবে প্রথমটায় জটিল বা তাত্ত্বিক প্রবন্ধ পড়তে যাবেন না। কারণ কনটেন্ট ভালো না লাগলে কিছুদিনের মধ্যেই পঠন চর্চায় আগ্রহ হারাবেন আপনি।
আর ওয়ার্ড বাই ওয়ার্ড বুঝে বুঝে না পড়ে পড়ুন স্বাভাবিক গতিতে। নতুন শব্দের জন্যে প্রতিবার ডিকশনারির দ্বারস্থ না হয়ে শব্দার্থ অনুমান করে নিন। হয়তো একবারেই আপনার অনুমান সঠিক হবে না; কিন্তু একই শব্দ যখন কয়েক জায়গায় পাবেন তখন বাক্যের অর্থ বা আবহ থেকে ঠিকই বুঝে যাবেন এর অর্থ!
প্রতিদিন এক পাতা করে ইংরেজিতে লেখার অভ্যাস করুন। যে বিষয়ে লিখতে ইচ্ছা হবে সেটাই লিখুন।
ব্যাকরণ ঠিক হলো কিনা, শুরুতেই সেটা নিয়ে দুশ্চিন্তা করবেন না। লেখাটা কতটা নান্দনিক হলো, ভাবার দরকার নেই সেটাও। যে শব্দে লিখতে পারবেন সেটাই লিখুন, অযথা ডিকশনারি ঘাটবেন না। ইংরেজি জার্নাল বা পত্রিকা পড়তে গিয়ে নতুন যে শব্দগুলো শিখলেন চেষ্টা করুন লেখায় সেগুলো ব্যবহারের।
এভাবে অনুশীলনে কিছুদিনের মধ্যেই কেটে যাবে আপনার লেখার জড়তা। ফ্রি-হ্যান্ড রাইটিংয়ে দক্ষতা বাড়ার পর টিচার বা ইংরেজিতে দক্ষ অন্য কাউকে দিয়ে আপনার লেখাগুলো মূল্যায়ন করিয়ে নিন। দেখবেন দিন দিন আপনার ভুল লেখার পরিমাণ কমে আসছে।
নিয়মিত ইংরেজি শুনুন। তা হতে পারে সংবাদ, প্রতিবেদন, ডকুমেন্টারি বা ইংরেজি ভাষায় অন্য কিছু। তবে কোন অঞ্চলের ইংরেজি শুনবেন সেটা একটি বিবেচ্য বিষয়।
যেমন ধরুন পাশ্চাত্যের ইংরেজি। ব্রিটিশর এত দ্রুত কথা বলে যে তাল সামলাতেই বেগ পেতে হয়। আর উচ্চারণ শুনলে মনে হয় অর্ধেকটা বুঝি গলায় আটকে রেখে কথা বলছেন তারা!
অন্যদিকে প্রাচ্যের, বিশেষত ভারতীয় ইংরেজি শুনে বোঝাটা বেশ সহজ। তাই বিগিনার লেভেলে ভারতীয় ইংরেজি শুনতে পারেন। কিছুদিন পর দক্ষতা বাড়লে তখন ব্রিটিশ বা আমেরিকান ইংরেজি ধরুন।
সাধারণত দেখা যায়, শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধ করার জন্যে অধিকাংশ ইংরেজি চর্চাকারীই ভোকাবুলারি বই বা ডিকশনারি থেকে শব্দার্থ মুখস্ত করে থাকেন। এভাবে প্রতিদিন ১০/২০টা করে শব্দ মুখস্ত করলেও লেখা বা বলার সময় মনে পড়ে না এর সিকিভাগও! ফলে নতুন নতুন শব্দ শেখার আগ্রহে কিছুদিনের মধ্যেই ভাটা পড়ে।
শব্দভাণ্ডার সমৃদ্ধকরণে সবচেয়ে কার্যকর উপায় হচ্ছে নতুন শব্দ শেখা মাত্রই তা প্রয়োগ করা।
ধরুন আপনি প্রতিদিন একটি করে ইংরেজি শব্দ অর্থসহ মুখস্ত করলেন। দিনের মধ্যে একাধিকবার কথা বলার সময় শব্দটি ব্যবহার করুন। একই কাজ করুন লেখার ক্ষেত্রেও। নতুন শেখা শব্দগুলো সহজে মনে থাকবে, আপনি দক্ষ হবেন সেগুলোর প্রয়োগেও।