টোটাল ফিটনেসের জন্য সাদাকায়ন

published : ২ ফেব্রুয়ারি ২০২৩

চারটি প্রশ্নোত্তর বলে দেবে আপনি টোটালি ফিট কিনা!

  • আপনি কি ক্লান্তিহীনভাবে অনেকক্ষণ কাজ করতে পারেন?
  • আপনি কি যেকোন পরিস্থিতিতে ঠাণ্ডা মাথায় সিদ্ধান্ত নিতে পারেন?
  • চারপাশের সবার সাথে আপনি কি সহজভাবে মিশতে পারেন?
  • আপনি কি সহজে অন্যকে ক্ষমা করতে পারেন?

প্রতিটি প্রশ্নের উত্তর যদি ‘হাঁ’ হয়, তাহলে আপনি টোটালি ফিট। আর যদি উত্তর ‘না’ হয়, তাহলে আসুন জেনে নেয়া যাক কীভাবে আপনি অর্জন করতে পারেন টোটাল ফিটনেস।

টোটালি ফিটনেস কি?

টোটাল ফিটনেস হচ্ছে, একজন মানুষের শারীরিক মানসিক সামাজিক ও আত্মিক শক্তির সুসংহত প্রকাশ। তখন তিনি প্রতীক হয়ে যান সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন কর্মব্যস্ত সুখী জীবনের। দীর্ঘ সুস্থ জীবন লাভের অনুঘটকও এই টোটাল ফিটনেস। আর এই টোটাল ফিটনেস অর্জনের জন্যই প্রয়োজন নিয়মিত ‘সাদাকায়ন’ এ অংশগ্রহণ।

টোটাল ফিটনেস সেন্টার ‘সাদাকায়ন’

শারীরিক মানসিক সামাজিক এবং আত্মিক ফিটনেসের সমন্বয় হচ্ছে টোটাল ফিটনেস। কোয়ান্টাম ৩০ বছর ধরে এ ধারণাকেই জাতীয় জীবনের অনুষঙ্গ করার জন্যে নিরলসভাবে কাজ করছে। টোটাল ফিটনেস অর্জনে আপনিও এর বাস্তব অনুশীলন করতে পারেন টোটাল ফিটনেস সেন্টার ‘সাদাকায়নে’। কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশন প্রতি শুক্রবার আয়োজন করে উন্মুক্ত প্রোগ্রাম ‘সাদাকায়ন’। আসলে ‘সাদাকায়ন’ শব্দটাই এসছে ‘সাদাকা’ থেকে। ‘সাদাকা’ মানে হচ্ছে সেবা, দান সাহায্য, সহযোগিতা, দয়া-মায়া- সবকিছুর সংমিশ্রণ হচ্ছে এই সাদাকা।

কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের প্রতি শুক্রবার উন্মুক্ত প্রোগ্রাম ‘সাদাকায়ন’।

শারীরিক ফিটনেস বাড়াবে সাদাকায়ন

শারীরিক ফিটনেস মানে শরীরের নির্দিষ্ট মাপ, ওজন ও আকার নয়। এই ফিটনেস নির্ভর করে একজন মানুষ ক্লান্তিহীনভাবে কতক্ষণ কাজ করতে পারেন, তার ওপর। তাই দেহের আকার-ওজনের ফ্যান্টাসি থেকে মুক্ত হয়ে গুরুত্ব দিন আপনার এনার্জি লেভেল ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতার দিকে। সাদাকায়নে নিয়মিত এলে আপনি পাবেন এ সংক্রান্ত চমৎকার দিক-নির্দেশনা।

মানসিক ফিটনেসের জন্য সাদাকায়ন

বাধা ও প্রতিকূলতার মুখে বিপদ-বিপর্যয় অতিক্রম করে ঘুরে দাঁড়ানোর সক্ষমতাই আপনার মেন্টাল ফিটনেস। মানসিক ফিটনেসের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় হলো দৃষ্টিভঙ্গি বা ভাবনা। কারণ আমরা যা ভাবি আমরা তা-ই। ভাবনাকে যত বিশুদ্ধ ও নির্ভেজাল রাখা সম্ভব হবে, মানসিক ফিটনেস তত বাড়বে। সাদাকায়নের সৎসঙ্ঘ একাত্ম হলে আপনি কখনও নিজেকে একা মনে করবেন না।

সামাজিক ফিটনেস অর্জনের অন্যতম শর্ত নিয়মিত সাদাকায়ন

সামাজিক ফিটনেসের প্রথম শর্ত হলো সামাজিক হওয়া। অর্থাৎ সমাজের অংশ হওয়া। ভার্চুয়াল বা অলীক জগৎ থেকে বেরিয়ে এসে সবার সাথে চলতে পারা। চারপাশের মানুষ আপনাকে দেখলে কতটা আপন মনে করে। আপনার উপস্থিতি তাদের কতটা তৃপ্তি দেয়, কতটা তারা আপনাকে কাছে কামনা করে। এটাই আপনার সোশাল বা সামাজিক ফিটনেসের ব্যারোমিটার। যা অর্জনে সাদাকায়ন আপনার জীবনে চমৎকার ভুমিকা রাখবে।

সামাজিক ফিটনেসের চমৎকার অনুঘটক হতে পারে সাদাকায়ন।

‘সোশ্যাল মাসল’ বাড়াতে সাদাকায়ন

সোশ্যাল নিউরোসায়েন্সের প্রবক্তা ড. জন টি ক্যাসিওপ্পো তার দীর্ঘ গবেষণার ভিত্তিতে বলেন, সমাজকে ঘিরেই মানুষের বেঁচে থাকা। আর দেহের পেশিগুলোর মতো প্রতিটি মানুষের অদৃশ্য একটি পেশি আছে। তা হলো ‘সোশ্যাল মাসল’। এই মাসল বা পেশিটি যত আমরা কাজে লাগাব, আমাদের সুখের পরিমাণ তত বাড়বে। সাদাকায়নে আপনার নিয়মিত উপস্থিতি আর ছোট-বড় সবার সাথে বাস্তব যোগাযোগ বাড়াবে আপনার ‘সোশ্যাল মাসল’।

সাদাকায়ন আপনাকে দেবে আত্মিক পূর্ণতা

‘একটি প্রদীপ যেমন আগুন ছাড়া প্রজ্বলিত হতে পারে না, তেমনি আত্মিক শূন্যতা নিয়ে কোনো মানুষ বাঁচতে পারে না।’—কথাটি হাজার বছর আগে বলে গেছেন মহামতি বুদ্ধ। আজ এই তথ্যপ্রযুক্তির উন্নয়নে ঠাসা পৃথিবীর বড় বড় চিকিৎসাবিজ্ঞানী ও সমাজবিজ্ঞানীরা একই কথা বলছেন। পণ্য পদমর্যাদা প্রাচুর্য—প্রতিটি প্রত্যাশা পূরণের পরও যে শূন্যতা আর হাহাকার, সেটি দূর করতেই প্রয়োজন আত্মিক উন্নয়ন। আত্মিক উন্নয়নের অন্যতম ভিত্তিই হলো আত্মকেন্দ্রিক না হয়ে সমাজকেন্দ্রিক হওয়া। শুধু নিজের জন্যে নয়, চারপাশে সবার জন্যে বাঁচা, সবার কথা ভাবা। সাদাকায়নে আত্ম উন্নয়ন ও সৃষ্টির সেবামূলক কার্যক্রম গুলো আপনাকে করবে তৃপ্ত, আনবে আত্মিক পূর্ণতা। আপনি হতে পারবেন স্পিরিচুয়ালি ফিট।

সাদাকায়ন আপনাকে নিয়মিত মেডিটেশন চর্চায় অনুপ্রাণিত করবে

নিউরোসায়েন্টিস্টরা গত ২৫ বছর গবেষণা করে বলছেন যে, মেডিটেশন বা ধ্যান হচ্ছে ব্রেনের ব্যায়াম। ধ্যান ব্রেনের কর্মকাঠামোকে সুবিন্যস্ত, সুসংহত, গতিময় ও প্রাণবন্ত করে। ব্রেনকে বেশি পরিমাণে ইতিবাচকভাবে ব্যবহার করার সামর্থ্য বাড়ায়। রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থাকে শক্তিশালী করে এবং মনকে প্রশান্ত করে। অস্থিরতা উদ্বেগ উৎকণ্ঠা ও হতাশা থেকে মুক্ত রাখে। সেইসাথে অসহিষ্ণুতা রূঢ়তা ও অমানবিকতার পরিবর্তে আচরণে আনে বিনয় এবং সমমর্মিতা। সাদাকায়নে নিয়মিত অংশগ্রহণ আপনাকে দুইবেলা মেডিটেশন চর্চায় অনুপ্রাণিত করবে, টোটাল ফিটনেস অর্জনে সার্বিকভাবে সহায়তা করবে।

মেডিটেশন চর্চা ইতিবাচক ভাবনাকে শক্তিশালী করে।

সাদাকায়ন বিশুদ্ধ সম্ভাবনার বলয়ের সাথে আপনার সত্তাকে সংযুক্ত করবে

সব মিলিয়ে টোটাল ফিটনেস— শারীরিক মানসিক সামাজিক ও আত্মিক ফিটনেসের পথ উন্মোচন করবে সাদাকায়ন। তাই ধ্যান করুন। অটুট রাখুন ভাবনার শক্তিকে। অর্জন করুন টোটাল ফিটনেস। আর এই চার ফিটনেসকে চমৎকার ভারসাম্যপূর্ণভাবে ধারণ করছে কোয়ান্টাম মেথড। অংশ নিন চার দিনের কোয়ান্টাম মেথড কোর্সে। সুখী ও প্রাণ-প্রাচুর্যে ভরপুর সুস্থ মানুষের সবটুকু প্রয়োজন পূরণের প্রক্রিয়াই রয়েছে কোয়ান্টামে। তাই কোয়ান্টামই আধুনিক মানুষের জীবনযাপনের বিজ্ঞান যা উপহার দিয়েছে টোটাল ফিটনেস প্রোগ্রাম।

তাই কোয়ান্টাম মেথড চর্চা করুন, আসুন সাদাকায়নসহ কোয়ান্টামের সকল উন্মুক্ত প্রোগ্রামে। দেশব্যাপী ফাউন্ডেশনের আড়াই শতাধিক শাখা কার্যক্রম আছে আপনারই অপেক্ষায়!