ঘর যদি হয় সুন্দর, ভালো থাকে মন

শিক্ষাবিদ, লেখক ও চিকিৎসাবিজ্ঞানের খ্যাতিমান অধ্যাপক ডা. শুভাগত চৌধুরী। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের চিকিৎসা অনুষদের সাবেক ডীন। সুস্বাস্থ্য, মেডিটেশন, সুস্থ জীবনাচার ও সঠিক খাদ্যাভ্যাস বিষয়ে নিয়মিত লিখছেন কোয়ান্টাম ওয়েবসাইটে।

 

ঘর যদি সুন্দর হয়, আরামের হয়, তাহলে মনও থাকে ভালো। তাই ঘর যেন থাকে পরিপাটি। থাকে যেন পরিচ্ছন্ন। তাহলে মন থাকবে শান্ত, নিয়ন্ত্রিত। দৈনন্দিন জীবনে ঘরে যেন জঞ্জাল না জমে। এ থেকে হতে পারে বিষণ্ণতা ও স্ট্রেস। ফলে অজান্তেই লক্ষ্য থেকে সরে যাবে মন।

কী করে পরিপাটি হবে ঘর?

  • শুরু হোক কম করে। পুরো ঘর পরিপাটি করা বেশি মনে হলেশুরু হোক ছোট পরিসরে, ধাপে ধাপে।
  • সারাদিন একটু একটু করে গোছগাছকরুন। একসাথে অনেক কিছু গোছানোর জন্যে না রেখে প্রতিবার গুছিয়ে কাজ করা সমীচীন। তাহলে চাপ পড়বে কম। ঘর পরিচ্ছন্ন করা হলে এবার সাজিয়ে রাখুন সব আসবাব আর সরঞ্জাম।
  • বাসায় যে-সব জিনিস অপ্রয়োজনীয় সেগুলো ফেলে দিনবা কিছু দান করুন। তাহলে জঞ্জাল জমবে না।

শয্যার ঘর হোক নিদ্রাবান্ধব

মনের স্বাস্থ্য ভালো রাখার জন্যে ঘুম হওয়া চাই ভালো। অনিদ্রা হলে কারোই মন ভালো থাকে না। তাই ঘুমের পরিবেশ হতে হবে উপযুক্ত। আলো শব্দ পরিবেশ তাপমাত্রা—সব হওয়া চাই ঘুমবান্ধব।

  • শয্যাঘরের তাপমাত্রা ৬৫-৬৭ ডিগ্রি ফারেনহাইট হওয়া ভালো। গরমে ফ্যান ছাড়তে পারেন। এসি ঘরের চেয়ে এটাই ভালো। শীতকালে নেবেন কম্বল।
  • শয্যাঘরে শব্দ যত কম হবে তত ভালো। প্রয়োজনে কানে ছিপি দিন।
  • ঘর যেন থাকে অন্ধকার। আলো নিভিয়ে দিন।
  • ঘুমের সময় ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস, মোবাইল, টিভি সব থাকবে বন্ধ।
  • জানালায়থাকবে ভারি পর্দা বা ব্লাইন্ড।

সৃজন করুন স্বস্তি

  • যে পরিসরে থাকবেন তাতে যেন থাকে আরাম, শান্তি আর সহযোগ।
  • আপনার প্রিয় কম্বল, প্রিয় উপহার, সুরভিত মোমবাতি, আরামের আলো আর ছিমছাম ঘর মনকে করে আনন্দময়।
  • দেয়ালের সুন্দর রঙ, প্রাকৃতিক আলোর প্রবেশ, বারান্দায় বাহারি বাগান—এ সবই মনকে করে প্রফুল্ল।
  • ঘরের যে জায়গায় গেলে মন খুশি হয়ে ওঠে, সেখানে বেশি সময় কাটান।
  • আবাসস্থলকে সাজান নানা ঢঙে, নানা সাজে, নানাভাবে। মন হবে চনমনে।

বসবাসের পরিসর হোক আপন

  • সাজিয়ে রাখুন নিজের ও প্রিয়জনদের ফটো।রাখুন প্রিয় জিনিস, মিউজিক সিস্টেম, ফুলদানি, বইয়ের শেলফ, ফটো অ্যালবাম।
  • অনেকে সময় এ-ঘর ও-ঘর আসবাব বা জিনিসপত্র স্থানান্তরেও মন হতে পারে খুশি। সামান্য কিছু বৈচিত্র্য জীবনে আনতে পারে নতুন উদ্যম।
  • ঘরে যেন বয় সুবাতাস। সেজন্যে থাকে যেন বাতাসের পরিচলন। জানালা থাকবে খোলা।

স্বাস্থ্যকর অভ্যাসের চর্চা করুন

  • থাকুন পরিচ্ছন্ন-পরিপাটি। প্রতিদিন করতে হবে স্নান। নিয়মিত দাঁত মাজবেন, নখ কাটবেন, চুল আঁচড়াবেন। পোশাক হবে পরিষ্কার, পরিপাটি।
  • করতে পারেন ব্রিদিং এক্সারসাইজ।
  • মন ভালো রাখার জন্যেসংগীত শুনুন।
  • বসে পড়ুন ধ্যানে। চুপ করে থাকুন ১০ মিনিট প্রতিদিন। নিজেকে সময় দিন।