২১মে, ২০২৩।
বছর ঘুরে আবার এলো বিশ্ব মেডিটেশন দিবস।
২০২১ সাল থেকে বাংলাদেশ ও বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কোয়ান্টাম ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে আনুষ্ঠানিকভাবে পালিত হচ্ছে এই দিনটি।
মেডিটেশন দিবস কী?
দিবস পালনের এই ব্যাপারটি আসলে কিছুটা প্রতীকী!
যখন কোনো সমাজ বা জনগোষ্ঠীকে কোনো বিষয়ে সচেতন করার প্রয়োজন হয়, গুরুত্ব ও তাৎপর্য নিয়ে কথা বলার প্রেক্ষাপট হয়, তখন একটি দিনকে নির্দিষ্ট করে সেদেশের সরকার, সংগঠন বা জাতিসংঘ এ ধরনের উদ্যোগ নিয়ে থাকে।
সেভাবেই উদ্ভব বিশ্ব মেডিটেশন দিবসের।
১৯৯৫ সালে উইল উইলিয়ামস নামে এক বৃটিশ মেডিটেশন প্রশিক্ষক প্রথম এ দিবসটি পালনের উদ্যোগ নেন।
উইল উইলিয়ামস অনিদ্রার রোগী ছিলেন। মেডিটেশনের মাধ্যমে নিরাময় লাভের পর তিনি এ সম্পর্কে আরো উৎসাহী হয়ে ওঠেন।
গভীর ধারণা লাভের জন্যে তিনি ভারতে আসেন, সান্নিধ্য লাভ দুজন ভারতীয় গুরুর। সেই সাথে চীনা, মিশরীয় ও অ্যামাজন অঞ্চলের ধ্যান সম্পর্কেও পাঠ নেন।
একপর্যায়ে ‘বিজা মেডিটেশন’ নামে একটি ধ্যানপদ্ধতির প্রবর্তন করেন যার মূল সুর উৎসারিত হয়েছে প্রাচ্যধারার ধ্যানপদ্ধতি থেকে।
এদিকে কোয়ান্টাম মেথড গত তিন দশক ধরে বাংলাভাষায় সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় মেডিটেশন মেথড।
চারদিনের মেডিটেশন কোর্সটি সম্পন্ন করে এ পর্যন্ত লক্ষাধিক মানুষ সরাসরি এবং অ্যাপ, বই, ফ্রি প্রোগ্রাম ও কাউন্সেলিংয়ের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে উপকৃত হয়েছেন আরো লাখো মানুষ!
সেজন্যেই ২০২১ সালে কোয়ান্টাম উদ্যোগ নেয় বিশ্ব মেডিটেশন দিবস উদযাপনের।
দেশে সকাল সাড়ে ন’টায় একযোগে যৌথ মেডিটেশন-সাদাকায়ন, কোভিড-১৯ বিধি মেনে সীমিত আয়োজন এবং আন্তরিক অংশগ্রহণের মধ্য দিয়ে দিবসটি হয়ে ওঠে উৎসবমুখর।
বিদেশেও স্থানীয় বিধি-নিষেধ মেনে হয়েছে আয়োজন, খোলা প্রান্তরে মেডিটেশন।
সবচেয়ে বর্ণাঢ্য ছিল অফিসিয়াল ইউটিউব চ্যানেলের আয়োজন। সকাল সাড়ে ৯ টায় ঢাকার স্বাগতায়ন থেকে বিশেষ সাদাকায়ন অনুষ্ঠানটি লাইভ স্ট্রিম করা হয়।
তার পরপরই স্টুডিও থেকে সরাসরি সম্প্রচারিত হয় বিশেষ মতবিনিময় অনুষ্ঠান ‘দেশে-বিদেশে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস’।
এতে নিউইয়র্ক, প্যারিস, টরন্টো, সিডনি, মেলবোর্ন, পার্থসহ এশিয়া ও আফ্রিকার একাধিক শহর থেকে যোগ দেন কোয়ান্টাম ধ্যানীরা।
এছাড়া প্রচারিত হয় পেশাজগত, মিডিয়াজগত ও শিক্ষার্থীদের জন্যে মেডিটেশনের গুরুত্ব বিষয়ক আলাদা অনুষ্ঠান।
এ দিবস উপলক্ষেই প্রকাশিত হয় দীর্ঘ প্রতীক্ষিত ভিডিও ডকুমেন্টারি মেডিটেশন : ভিজুয়াল গাইড।
এসব আয়োজনের মিডিয়া কাভারেজও হয় বেশ গুরুত্বের সাথে। প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক মিডিয়ায় প্রচারিত হয় বিশেষ খবর, ফিচার, টক শো ও সাক্ষাতকার অনুষ্ঠান। এফএম রেডিওতে হয় মেডিটেশনবিষয়ক বিশেষ অনুষ্ঠান।
দিবসটি শুধু একটি দিনে সীমাবদ্ধ থাকে নি। মেডিটেশন উৎসবকে বিস্তৃত করা হয় একমাস- ২১ জুন আন্তর্জাতিক যোগ দিবস পর্যন্ত। মাসব্যাপী ‘রচনা, অডিও-ভিডিও, ফটোগ্রাফ ও চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতায়’ অংশ নেন ছোট-বড়, ছেলে-বুড়ো হাজারো প্রতিযোগী।
বিজয়ী ঘোষণা ও পুরস্কার বিতরণ অনুষ্ঠান আয়োজন করা হয় ২১ জুন আইডিইবি মিলনায়তনে।
‘নিয়মিত মেডিটেশন, সুস্থ সফল সুখীজীবন’ এই থিমে প্রতিযোগিতার ৫টি ক্যাটাগরিতে মোট ৫৮ জন প্রতিযোগীর প্রত্যেকে পুরস্কার হিসেবে পান ১০ হাজার টাকার বই। আর উপস্থিত প্রতিযোগীদের প্রত্যেককে উপহারস্বরূপ দেয়া হয় একটি করে শুদ্ধাচার বই ও সনদ।
প্রতিযোগিতায় জমা পড়া চিত্রকর্মগুলো থেকে নির্বাচিত ১০০ চিত্রকর্ম নিয়ে ৪-৮ জানুয়ারি ২০২২ জাতীয় শিল্পকলা একাডেমিতে আয়োজন করা হয় ‘শিশু কিশোর তরুণদের ভাবনায় মেডিটেশন’ শীর্ষক বিশেষ প্রদর্শনী।
২০২২ এর ২১ মে দ্বিতীয়বারের মতো উদযাপিত হয় বিশ্ব মেডিটেশন দিবস।
থিম ছিল ‘ভালো মানুষ ভালো দেশ, স্বর্গভূমি বাংলাদেশ’
পথচলতি সাধারণ মানুষের কাছে আমরা জানতে চাই ভালো মানুষ ভালো দেশ- এর সংজ্ঞা
২১ মে ভোরে প্রাকৃতিক দুর্যোগের মধ্যেও দেশব্যাপী শতাধিক উন্মুক্ত স্থানে আয়োজিত হয় বিশ্ব মেডিটেশন দিবসের অনুষ্ঠান। রাত ন’টায় এর ওপরে প্রচারিত হয় একটি ইউটিউব লাইভ যাতে সরাসরি মতবিনিময় করেন দেশ-বিদেশের অর্ধশতাধিক দায়িত্বশীল!
আসলে মানুষ ভালো হলে এবং ভালো মানুষের সংখ্যা বেড়ে গেলেই ভালো দেশ গড়া সম্ভব, দেশকে স্বর্গভূমিতে রূপান্তর করা সম্ভব।
২০২৩ সালেও তাই একই থিমে আয়োজিত হতে যাচ্ছে বিশ্ব মেডিটেশন দিবস-২০২৩
ভোর ছটায় একযোগে অনুষ্ঠিত হবে সারাদেশের প্রায় ১০০ উন্মুক্ত স্থানে
সপরিবার সবান্ধব আপনিও আমন্ত্রিত
২১ মে, রবিবার ভোর ৬টায় গুরুজীর সাথে বিশেষ মেডিটেশনে